অনুশ্রুতির ১ম খন্ডে “আদর্শ” শিরোনামে পৃষ্ঠা ২৬৯ – ২৮১ পর্যন্ত মোট ৮২ টি বাণী রয়েছে। নিচে ০১ – ৪০ নং বাণীসমূহ দেয়া হলো।
সৎ ও শ্রেষ্ঠ আশ্রয় যা'র
উন্নতি হয় অবাধ তা'র। ১।
সর্ব্বস্বার্থের সমাধান
জানিস্ ইষ্ট-প্রতিষ্ঠান। ২।
ইষ্টস্বার্থী বৃত্তিটান
যেমনই লোক—উচ্চপ্রাণ। ৩।
আদর্শ নাই লোক-মত
কালকবলের পেছল পথ। ৪।
আদর্শহীন অবিবেকী
বহু গুণেও হয় সে মেকী। ৫।
শ্রেষ্ঠে রেখে তোর আনতি
বাড়িয়ে চলিস্ চলার গতি। ৬।
গুরুর কাজে অপমান
ঘোর নরকে তা'র স্থান। ৭।
একটাই কিন্তু সোজা পথ
জাহান্নমে যেতে,
আদর্শেতে কৃতঘ্নতা—
ভুল নাইকো এতে। ৮।
বাঁচা-বাড়ার শক্তি-সেচন
করেন যে-জন, নরের অয়ন। ৯।
যা'কে দেখে চলায় তোমার
চলন সার্থক হয়,
উল্লঙ্ঘনে এড়াতে পার
অনেক বিপর্য্যয়;
যা'র ভাবে আর কথায় কর
অন্তর-বিন্যাস,
সেই মানুষই আদর্শ—যা'র
ইষ্টেতে সন্ন্যাস। ১০।
সত্যিকার আদর্শ যিনি
সদগুরুও তিনি,
বেফাঁস লোকে বিভেদ দেখে
বাস্তবে না চিনি। ১১।
বিপাক-পথে হাত ধ'রে যে
চলার কায়দা জানিয়ে দেয়,
তাঁ'কেই জানিস গুরু ব'লে
অভয়পথে সেই তো নেয়। ১২।
জন্ম দিতে লাগেই যেমন
মায়ের পিতায় উপরতি,
জ্ঞান গজাতে ব্যক্তিত্বেরও
ইষ্টে লাগে অনুগতি। ১৩।
মা আর বাপের আকর্ষণী
উপভোগী উদ্দীপনায়,
বিধানমতে সগোছগাছে
তনয় যেমন জন্ম পায়,
ইষ্টনেশায় তেমনি জানিস্
সপর্য্যায়ে বৃত্তি ক'টা,
বিন্যাসে হয় অখণ্ড এক
স্বাতন্ত্র্যে তা'র ব্যক্তিত্বটা। ১৪।
করা-বলার সিংহাসনে
ইষ্ট অটুট যত,
উন্নতিটি অবাধ হ'য়ে
বাঁধা থাকবে তত। ১৫।
বৃত্তি যখন বুদ্ধি ফেঁদে
রুখতে তোরে পারল না,
নিয়ন্ত্রণে হবেই তা'র
ইষ্টস্বার্থে যোজনা,
মুক্তি তখন মুচকে হেসে
মায়ের মত দিয়ে কোল,
চলবে নিয়ে জগৎহিতে
ধ'রে ইষ্টস্বার্থ-বোল। ১৬।
জ্ঞানের আলোয় হ'স্ না যতই
ঝকমকে আর আলোকিত—
ইষ্টস্বার্থে যদিই না হয়
সব-কিছু তোর একীকৃত;
এই যদি না হ'তে পারিস্
ও কিছু নয় যা'ই না করিস্,
আলোর বিপুল ঝরার মত
ঝকঝকে তোর পতন তত । ১৭।
সংস্কার যা'র এমনি নীচু
এমনি ক্লীব উদার মন,
জাত-আদর্শ-কৃষ্টি-গুরুর
গৌরবে গোঁড়া নয় কখন;
বিশ্বপ্রেমের ঘোমটা টানা
সাম্য ধাঁজের বৃত্তিপ্রাণা,
কুলাঙ্গার সে—এমন জনার
সমর্থনেও হয় পতন । ১৮ ।
ইষ্টস্বার্থী গুরু না হ'লে
গুরুই সে তো নয়,
অনুসরণে তা'কে জানিস্
আছেই অনেক ভয়। ১৯।
গুরু পরখ করতে চাস্ তুই
এমনি বেকুব ঘোর,
পরীক্ষাই যদি করতে পারলি
গুরু কিসের তোর?
পরখ যদি করবি রে তুই
এমন থাকে রোখ,
ইষ্টস্বার্থ-প্রতিষ্ঠায় দেখ্
কতখানি তাঁ'র ঝোঁক । ২০।
আদর্শ যেই টুট্ল—
বংশ জানিস নিম্নপথে
কুক্কুরবৎ ছুটল। ২১।
মাতৃভক্তি ইষ্টে যাহার
সার্থকতায় ধায়,
চিন্তা যাহার কর্ম্মে ফুটে
স্বতঃই মুক্তি পায়;
নেওয়ার চেয়ে দেওয়ার তৃপ্তি
বুক জুড়ে যা'র থাকে,
অনুকম্পায় সেবা যাহার
সহজ ডাকায় ডাকে;
উন্নতিতে নিপুণ-নেশায়
দীপন জীবন তা'র,
ধন্য হ'য়ে ভরদুনিয়ায়
চলেই অনিবার। ২২।
আদর্শহীন পড়শী-মাঝে
বহুমুখীন তোর চলন,
এই আদর্শ-বিহীনতায়
টুকরোমিতে সব মরণ। ২৩।
আদর্শতে তাল রেখে যে
বুদ্ধি-বিচার ধরে,
সৎবিচারক শ্রেষ্ঠ পূজক
মানের মুকুট পরে। ২৪।
যতই উদার হ'স্ না কেন
হ'স্ যতই বা ঢিট গোঁড়া,
পূরণপ্রবণ ইষ্ট বিনা
পুষ্টিতে তোর ছাই পোড়া। ২৫।
ইষ্টগুরুর স্বার্থরক্ষা
প্রাণ গেলেও তুই ছাড়িস্ না,
সব পাপেতেই ত্রাণ পাবি তুই
ঋষির বাণী ভুলিস্ না। ২৬ ।
স্বামীর ঝোঁকে ছুটলে নারী
শ্রেষ্ঠ ছেলের মা,
ইষ্টঝোঁকে ছুটলে পুরুষ
প্রজ্ঞা অনুপমা। ২৭।
ইষ্টতন্ত্রী না হ'লেই তুই
বৃত্তিতন্ত্রী হ'বি,
বৃত্তিতন্ত্রের অযুত টুকরোয়
স্বাতন্ত্র্যহীন র'বি । ২৮ ।
দশের মতে চললে রে তুই
হ'বি অযুতে অন্তর্দ্ধান,
এক আদর্শে চললে পাবি
দশের পুরণ-গড়ন-জ্ঞান । ২৯।
আদর্শটির স্পর্শহারা
যে-কাজই তোর হয়,
ঠিকই জানিস্ সে-কাজই তোর
পণ্ডতে পায় লয়। ৩০।
লক্ষ ভাল যাই কর না
যতই বিপুল হৃদয় হোক,
ইষ্টার্থটি যা'র ব্যাহত
সেইটি জেনো বিষম রোগ। ৩১।
দেওয়া-নেওয়া-সেবা-ভরণ
ইষ্টার্থে তোর নাই যদি হয়,
সকল চেষ্টা প্রতিষ্ঠা তোর
আসবে নিয়ে বিয়োগ আর ক্ষয়। ৩২।
প্রেষ্ঠহারা চলন-চালন
শতেক প্রয়োজন,
পদে-পদে বিপাক আনে
ভ্রান্তি অগণন। ৩৩।
এক ঝাঁকিতে মোড় ফিরিয়ে
অভ্যাস-ব্যবহার-প্রত্যয়ের,
আদর্শেতে অবাধ চ'লে
বর্দ্ধনে হ' অঢেল চের। ৩৪।
দেখা-শুনা আসায়-মেশার
সেবা বর্দ্ধমান,
ইষ্টে এমনতর যতই
হৃদয় পূর্য্যমাণ । ৩৫।
সিদ্ধান্তে যে আসতে নারে
ত্বরিত-চলন বেগে,
বিবেক-বুদ্ধি খিন্ন তাহার
আদর্শ নাই জেগে । ৩৬।
প্রেষ্ঠ যাহার শ্রেষ্ঠ প্রিয়
চলেই নাকো তাঁ'য় ছাড়া,
চলন-বলন, স্বভাবটি তা'র
তেমনি হ'য়েই দেয় সাড়া। ৩৭।
মাতা-পিতা শ্রেষ্ঠজনে
শ্রদ্ধা-ভক্তি যাই রাখ না,
ইষ্টানুগ না হ'লে তা'
আসবে নাকো সম্বর্দ্ধনা । ৩৮।
ইষ্টীচলন থাকেই যদি
রুখবে না তোয় দুর্গতি,
দুর্গতি সব দুর্গ হ'য়ে
আনবে জয়ে উন্নতি। ৩১।
আদর্শ যেথা অটুট হ'য়ে
সেবায় আনে বর্দ্ধনা,
যুক্ততানে উঠবে সেথায়
স্বাধীনতার মূর্চ্ছনা। ৪০।