অনুশ্রুতির ১ম খন্ডে “যাজন” শিরোনামে পৃষ্ঠা ৩৩৫ – ৩৪০ পর্যন্ত মোট ৩১ টি বাণী রয়েছে। নিচে বাণীসমূহ দেয়া হলো।
যাজনবুদ্ধি শিথিল যত অনুরাগও আবিল তত । ১।
ধৰ্ম্মবুলি বৃত্তি লাগি' ম্লেচ্ছ তা'রা স্বার্থরাগী । ২ ।
প্রেষ্ঠ-পূজায় প্রেষ্ঠ-দানে প্রেষ্ঠসঙ্গ-নেশায়, রঙ্গিল-মাতাল রকম যেথায় যাজন বলে তা'য় । ৩ ।
যা'রই যাজন করবি তুই— সেই জানিস্ তোর থাকবে জুড়ে অন্তরেরই আকাশভূঁই । ৪।
প্রেষ্ঠস্বার্থে থাকলে টান যাজন করে বুদ্ধিমান । ৫।
আদর্শের অপবাদে অনুগতি ক্ষুন্ন, শ্লথ তা'র প্রাণগতি বুকভরা শূন্য । ৬।
শিথিল-স্রোতা টান যেখানে বিবেকে কর্তব্যবোধ, বগবগানির ভণ্ড ভঙ্গী আপসোসেই হয় শোধ । ৭।
ইষ্টনিষ্ঠার বাগবাদিতায় সবাই চমৎকার, কিছুই কিন্তু করলি না তাঁর স্বার্থ-প্রতিষ্ঠার; তোর বৃত্তিভরা আকুল করা ভড়ংভরা টান, চাওয়ার বেলায় লক্ষ জিহ্বা দেবার বেলায় ম্লান, এই টানে তুই নিজে ঠঁকে ইষ্টে দিচ্ছিস্ ফাঁকি, ফাঁকি যে রে মেকীই আনে এটাও বুঝলি নাকি ? ৮ ।
টানের লক্ষণ যাজন-সেবা যাজনে উপভোগ, এই প্রেরণায় আসে কৰ্ম্ম কর্ম্মে পূর্ণযোগ । ৯ ।
ইষ্টকথা বলতে গিয়ে
কেরদানি যে নিজের কয়,
এই লক্ষণ দেখলে বুঝিস্
ইষ্টার্থী সে মোটেই নয়। ১০।
ইষ্টস্বার্থী ঝোঁক নাই প্রেষ্ঠকথায় হামবড়াই, নিশ্চয় জানিস্ ভণ্ড তা'রা উদ্দেশ্য ঠক সাধু সাজাই । ১১।
বিপত্তির আর বাধার কথা নির্য্যাতনের খতিয়ান, নাই সেখানে ভালবাসা তাচ্ছিল্যেরই সেথায় স্থান । ১২।
চাহিদাভরা শিথিল ঝোঁক
দুর্ব্বলতার জানিস্ কোঁক । ১৩।
ঠুনকো মান বাগবিলাসী
আড়ষ্ট যে কাজে,
লক্ষ্মীছাড়া ঘোর হাভাতে
সকলই তা'র বাজে । ১৪।
ইষ্টনেশার কঠোর টানের উল্টো যাহা তা'য় বিরতি, সহজভাবে আসছে যা' তাই হ'চ্ছে জানিস্ বিরাগ-মতি । ১৫।
হটিয়ে দিল যেথায় বাধা নির্য্যাতনের ভ্যাংচানি, ভালবাসা নাই সেখানে কাম-কামনার গোঙরানি । ১৬।
সাধু ধাঁচের কায়দা-কথা মতলববাজী অন্তরে, ইষ্টস্বার্থে মিথ্যা উদার নাশক জানিস্ সেই নরে । ১৭।
বৃত্তিস্বার্থ-প্রতিষ্ঠাতে
অনুরাগী হ'লেই জানিস্,
সৎ-এর চালে মানুষ বাগায়
বৃত্তিতে তেল ক’রে মালিশ । ১৮।
বৃত্তিস্বার্থ-প্রতিষ্ঠাতে প্রেষ্ঠপ্রেমী সাজবে যে-জন, প্রত্যয়বিহীন যাজনে তা'র প্রেষ্ঠে যুক্ত কেউ না কখন । ১৯।
যেমন মানুষ দেখবি যা'রে
অভ্যাস-ব্যবহার যেমনি ঝোঁক,
সেই তালেতে করবি যাজন
ফিরিয়ে দিবি জীবন-রোখ । ২০।
টানের তোড়ে হৃদয় ফেঁপে
উথলালে যাজন,
বাধায় কিংবা অপঘাতে
নেভে কি কখন ? ২১।
প্রেষ্ঠ-প্রেমের মুখোস প'রে হামবড়ায়ের প্রতিষ্ঠায়, যাজন যখন করতে থাকিস্ প্রিয়র যাজন নাই সেথায় । ২২।
অহঙ্কারের জয়-ঘোষণায় যাজন যদি ধায়, ফুৎকারে তা' একটু বাধায় নিভেই যেতে চায় । ২৩।
জীবনবৃদ্ধি সদালাপন ইষ্টানুগ টানে, করলে যাজন ক্ষিপ্র পায়ে দীপ্তি দেয় প্রাণে । ২৪।
বৃত্তি-জটিল জীবন-পথে বৃত্তি-ঘূর্ণীঘোর, জীবনবৃদ্ধি-স্থৈর্য্যদীপন দানই যাজন তোর । ২৫।
যাজন আনে যুক্তবুদ্ধি
সমাহার নিয়ে সাথে,
ধী-এর সাথে দক্ষতা আনে
প্রজ্ঞা-মুকুট মাথে। ২৬।
শ্রেষ্ঠ-যাজী হ'লেই বাড়ে
ব্যক্তিত্বটা প্রজ্ঞা নিয়ে,
নিম্নযজায় বুদ্ধি মোটা
বৃত্তি বেড়ায় ফাঁকি দিয়ে । ২৭।
চাওয়ার আগেই দেবার আবেগ
যেই যাজনে ফুটলো,
সেই যাজনেই যজমানের
দৈন্যে ভাঙ্গন ধরল । ২৮ ।
যাজনসেবায় দান-প্রবৃত্তি
উথলে যদি উঠলো না,
নিরর্থক সে-যাজনসেবা
অভাব কা'রো ঘুচলো না । ২৯।
দুর্দিনেতে যাজনসেবায় দেখবি মানুষের প্রয়োজন, যত পারিস্ করতে থাকিস্ ও-সবগুলির সম্পূরণ; এই পথেতে আসবে দেখবি কী ক'রে তুই করবি কী, সেই করাটি চিনে নিয়ে চলতে থাকিস্ খাটিয়ে ধী । ৩০।
তাপ-চরমে ঝলকে অগ্নি
অগ্নি জ্যোতি বিকিরণে,
যাজনে বৃদ্ধি তথা সম্বেগ
সম্বেগ সিদ্ধি উপায়নে । ৩১।