সত্যানুসরণ-এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:
আদর্শে মন সম্যক্-প্রকারে ন্যস্ত করার নাম—সন্ন্যাস।
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :
প্রশ্ন তুললেন সতীশদা (পাল)—আদর্শ বলতে কি বুঝব? আদর্শে মন সম্যক্-প্রকারে ন্যস্ত করা হয় কেমন করে?
অলকেশদা (মিশ্র)—যাঁকে মেনে আমরা চলি তিনিই আদর্শ ৷ যাঁর আদেশ আমরা পালন করি তিনি হলেন আমাদের আদর্শ। আমার মনে হয় আদর্শ কথাটা ‘আদেশ’ থেকে এসেছে।
সতীশদা—তাহ’লে আপনি এ বাণীটার পরিপূর্ণ অর্থ কী করতে চাইছেন?
অলকেশদা—সম্যক্প্রকার মানে পরিপূর্ণরূপে, সামগ্রিকভাবে। আদর্শে মন সম্যক্প্রকারে ন্যস্ত করা মানে সমগ্র মনপ্রাণ দিয়ে কাউকে মেনে চলা।
জনৈক দাদা—আদর্শ কথাটা clear (পরিষ্কার) হয়নি। আমরা সম্যকরূপে কাকে মেনে চলব?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব এতক্ষণ অলকেশদার কথা শুনছিলেন। এবার বললেন—আদর্শ এসেছে আ-দৃশ-ধাতু থেকে । যাঁকে দেখে আমরা চলি, যাঁকে সামনে রেখে আমরা চলি—তিনিই আমাদের আদর্শ। কিন্তু ‘আদেশ’ কথার সাথে দৃশ-ধাতুর যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায় না।
এবার অভিধান খুলে দেখা হ’ল—আ-দিশ-ধাতু থেকে আদেশ কথাটা এসেছে, অর্থ হল উপদেশ, আজ্ঞা, কথন, অনুভূতি প্রভৃতি। আর আদর্শ হ’ল আ-দৃশ-ধাতু+অন; যা’ দেখে কিছু শেখা বা করা যায়। দৃশ্ মানে দর্শন বা জ্ঞান।
অলকেশদা প্রশ্ন তুললেন—আজ্ঞে, মানুষ তো অসৎকেও আদর্শ ক’রে নিয়ে চলে।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—সেটা অসৎ আদর্শ
পরমেশ্বরদা (পাল)—ঠাকুর অসৎ আদর্শে মন ন্যস্ত না-করার কথা বলেছেন।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—হ্যাঁ।
সতীশদা—তাহলে আদর্শে মন সম্যকরূপে ন্যস্ত করার অর্থ কী দাঁড়াল?
সবাইকে নীরব থাকতে দেখে শ্রীশ্রীপিতৃদেব বললেন—আদর্শে মন সংন্যস্ত করা মানে সম্পূর্ণরূপে তাঁকে (আদর্শকে) অনুসরণ করা। আদর্শ হ’ল জীবনের আদর্শ। যাঁকে দেখে জীবন-চলনা ঠিক করি তিনিই আদর্শ। যাঁকে জীবনে মুখ্য ক’রে চলি তিনিই আদর্শ।
প্রশ্ন—আমরা কাকে জীবনে মুখ্য ক’রে চলব?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—সে তো আলাদা প্রশ্ন। কাকে জীবনে মুখ্য করা উচিত, কাকে লক্ষ্য ক’রে জীবন-চলনা ঠিক করা উচিত—সে-সব ঠাকুর ব’লে গেছেন। এখানে সন্ন্যাস কথার অর্থ বোঝান হচ্ছে।
অলকেশদা—আজ্ঞে, সম্যক্ প্রকারে মন ন্যস্ত করা কেমন? আমরা কি পরিপূর্ণভাবে (সামগ্রিকভাবে) কোন কিছুতে মন ন্যস্ত করতে পারি?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব (অলকেশদার দিকে তাকিয়ে)—শোন্, শোন্। এ-সব প্রশ্নই আসে না। অন্ততঃ পাঁচ মিনিটের জন্যেও মন স্থির করতে পারলে বোঝা যায় এ-সব।
দুলালদা (মজুমদার) এবার শ্রীশ্রীঠাকুরের একটা ছড়া আবৃত্তি করে শোনালেন
“সব প্রবৃত্তি রত থাকে
ইষ্টকার্য্য ল’য়ে,
সে-ই সন্ন্যাসী, সে-ই তো যোগী
কাল নত যার ভয়ে।”
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—হ্যাঁ, (অলকেশদাকে নির্দেশ করে) ওই শোন্।
এবার প্রশ্ন উঠল, আদর্শ কি সবসময় বাস্তব ও মূর্ত হবে, নাকি ভাগবত আদর্শ থাকতে পারে?
অনেকেই এ প্রশ্নের উত্তর নিজ-নিজ ধারণা অনুযায়ী দিলেন।
সতীশদা বললেন—মীরাবাঈ-এর ঘটনা থেকে আমরা দেখতে পাই, মীরাবাঈ শ্রীকৃষ্ণকে আদর্শরূপে পেয়েছিলেন। শ্রীকৃষ্ণই ছিলেন তাঁর ধ্যান-জ্ঞান।
সুধীরদা (সমাজদার)—আদর্শ কি জীবনের সকল দিকের, না কি কোন এক বিশেষ দিকের পরিপূরক? মহাত্মা গান্ধী কি আমাদের নিকট আদর্শস্থানীয়?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—দেশ উদ্ধারের পক্ষে মহাত্মা গান্ধী আদর্শ হ’তে পারেন। বিভিন্ন বিষয়ের আদর্শ বিভিন্ন। দেশ উদ্ধারের আদর্শ এক, আবার চোর্য্য-বৃত্তির আদর্শ আরেক। Pick-pocket কেউ যদি শিখতে চায়, তা’হলে তার একটা আদর্শ থাকবে। যে যেরূপ মানুষকে অনুসরণ করে, সে সে-ভাবের মানুষ হয়।
অজিতদা (গঙ্গোপাধ্যায়)—আজ্ঞে, সৎসঙ্গীদের অনেকে ভাবে, আমরা যারা ঠাকুর ধরেছি একমাত্র তারাই ঠিক পথে আছি, আর সব যারা অন্য পথ ধ’রে আছে তারা সবাই ভুল করছে।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—এ-সব কথা আমার মোটেই ভাল লাগে না। কারও বিশ্বাস হনন করা আমার ভাল লাগে না। বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে তাঁকে অনুসরণ করে। যার যেমন বিশ্বাস সে সে-ভাবের অনুসরণ করে। মহাপ্রভুর দীক্ষিত যারা তাদের দেখি রাস্তায়-রাস্তায় হরিনাম ক’রে বেড়াচ্ছে—কপালে তিলক-ফোঁটা। আবার দেখো সুদূর ইউরোপ, আমেরিকার ছেলেরা এদেশে এসে তাদের নিজেদের পোষাক-পরিচ্ছদ ত্যাগ করেছে। কত মেমসাহেব বাঙালী মেয়েদের মত পোষাক পরছে। তাদের দেশ থেকে এখানে এসে শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীচৈতন্যদেবের উপাসনা করছে। তাদের ভাল লাগে ব’লেই তো করে। মানুষ এ-পথে এগিয়ে রস পায় ব’লেই তো করে।
আবার প্রশ্ন উঠল—আদর্শ কি সব সময় বাস্তব ও মূর্ত হবে, না-কি ভাগবত আদর্শ থাকতে পারে?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—ভাগবত আদর্শ কেমন? আমি গুরুর কাছে দীক্ষা নিলাম কিন্তু প্রকৃত ভাব নারায়ণের।আমরা দীক্ষা নিই ঋত্বিকের কাছে, কিন্তু প্রকৃত ভাব তো ঠাকুরের।
সতীশদা—আজ্ঞে, মীরাবাঈ শ্রীকৃষ্ণের ভাবে বিভোর থাকতেন, কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ তখন বিদেহী ছিলেন।
শ্ৰীশ্রীপিতৃদেব—তা’ ঠিক। কিন্তু মীরাবাঈয়ের নিকট শ্রীকৃষ্ণ মূর্তই ছিলেন। (ক্ষণিক থেমে) আমরা ঠাকুরের দীক্ষা নিয়েছি। প্রতিনিয়তই ঠাকুর আমাদের নিকট মূর্ত। ঠাকুর ছিলেন, এখনও আছেন, আবার থাকবেনও। প্রতি ঘটে-ঘটে তিনি আছেনই। তিনি মূর্তই তো।
পরমেশ্বরদা একই প্রশ্ন করলেন—শ্রীকৃষ্ণ বিগত হওয়ার পর যদি তাঁর ভাব কেউ অনুসরণ করে তা’হলে তাঁর নিকট শ্রীকৃষ্ণ মূর্ত না অমূর্ত?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—এ সব realization-এর (উপলব্ধির) ব্যাপার। এ-সব নির্ভর করে সাধকের অনুভূতির ওপর।
ধ্রুবর কথা উঠল। শ্রীশ্রীপিতৃদেব বললেন—ধ্রুব শ্রীমধুসূদনের জন্য পাগল হ’য়ে উঠেছিল। কোথায় শ্রীমধুসূদন, কোথায় তিনি—এই ছিল তাঁর একমাত্র ধ্যান। এই ধ্যান করতে-করতে সে পেলও সেই তাঁকে। তখন ধ্রুবর নিকট সর্বঘটে শ্রীমধুসূদন। সর্বত্রই তিনি। তিনি ছাড়া আর যেন কিছু নেই—এ-রকম হয়।
তবে realization-এর (উপলব্ধির, অনুভূতির) বিবিধ stage (ধাপ) থাকে। সাধক কোন বিশেষ ভাবের অনুসরণ করতে-করতে বেশ খানিকটা এগিয়ে যেতে পারে। নিজ ইচ্ছাশক্তিতে ওই ভাব ধ’রে এগিয়ে যেতে পারে । তবে একটা stage আসে, যখন আর এগোতে পারে না। তাকে সদ্গুরু গ্রহণ করতে হয়। ওই সদ্গুরুকে গ্রহণ ক’রে তার ঈশ্বরপ্রাপ্তি ঘটে। ধ্রুবর যেমন হয়েছিল।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব বলে চলেছেন—তবে যার ব্যাকুল আকাঙ্ক্ষা থাকে, তার ঈশ্বরদর্শন হয়ই। তিনিই তখন পথ করে দেন। যে-কোন একটা পথ ধ’রে চলতে থাকলেই সেই জায়গায় পৌঁছান যায়। তখন জাগতিক যে-কোন সুখ আলুনি মনে হয়। টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত, স্ত্রী-পুত্র সব ছেড়ে আসতে মানুষ পিছপা হয় না। তখন মনে হয়, এ-সবে কি সুখ। আরও কত বেশী সুখ, কত বেশী শান্তি, কত বেশী আনন্দ ঈশ্বর-সাধনায়—এ-রকম মনে হয়।
শ্যামসুন্দর—যে-কোন একটা মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে চললেই কি সাধনায় সিদ্ধ হওয়া যায়?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—শুধু মন্ত্র নিলেই কিছু হয় না। আমরা সাধন-পথে যদি ঠিক অগ্রসর না হই, তাহলে কিছুই, হবে না। আমরা ঠাকুর ধ’রে যদি sincerely (নিষ্ঠাসহ) না চলি, তাহলে কি হবে? Sincerely না করলে ‘সদগুরু’, ‘পুরুষোত্তম’—এ-সব বোধেই আসে না। অনুভূতিই আসে না। Sincerely করলেই তবে বোঝা যায়। তখন মানুষও চেনা যায়; কোনটা আসল, কোনটা নকল—বুঝতে কষ্ট হয় না।
অজিতদা—আজ্ঞে, পিতৃদত্ত জাগতিক সম্পদের ওপর যেমন পুত্রদের অধিকার থাকে তেমনি আধ্যাত্মিক জগতের ক্ষেত্রেও কি পিতৃদত্ত সম্পদের ওপর পুত্রদের অধিকার থাকে?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—হ্যাঁ,আছে।—কি রকম আছে জান? সে হচ্ছে son by birth (ঔরসজাত সন্তান)-ও যেমন, Son by culture (কৃষ্টিগত সম্তান)-ও তেমন। ঠাকুর বার-বার বলেছেন, তোরা আমাকে নে, আমি তোদের জন্য এসেছি। তিনি বার বার সবাইকে বলেছেন—আমাকে নে—নে, নে, তোরা নে। কিন্তু আমরা তা’ বুঝিনি। ঠাকুরের বলা আছে-“তোদের মহা-মহা পাপ থাক, ব্ৰহ্মহত্যা, গোহত্যা ইত্যাদি ক’রে থাকিস, ভয় নাই।…. একবার পরমাত্মার ভাবে ভাবিত হ’, তোদের সব জ্বালা-যন্ত্রণা আমার হাত দিয়ে মুছে দেব” (পুণ্যপুঁথি)। পরমহংসদেবের জীবনীতেও আছে—তোরা আয়, আয়। কতদিন আর তোদের জন্য অপেক্ষা করব?…
আবেগমথিত সুরে শ্রীশ্রীপিতৃদেব বললেন—Sincerely (নিষ্ঠাসহ) করতে হয়, তবে পাওয়া যায়। Sincerely না করলে কিছুই হয় না।
ভবানীদা—আজ্ঞে, ভোলানন্দ গিরি বলেছেন, সদগুরুর কৃপা ভিন্ন সাধনায় উন্নতি হওয়া সম্ভব নয়।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—সদগুরুর কৃপা তো আমরা পাচ্ছিই। তিনি দীক্ষা দিয়েছেন। তিনি কৃপা ক’রেই আছেন।
আবার পূর্ব কথার সূত্র ধ’রে শ্রীশ্রীপিতৃদেব বললেন—করলেই বোঝা যায় who is who. আমরা যদি তাঁর অনুশাসনবাদ মেনে চলি তবেই বুঝতে পারি। না করলে বোঝা যায় না। ঠাকুর ব’লে গেছেন, ‘যা দিয়ে গেলাম দশ হাজার বছর আর আসতে হবে না’। সব তো ব’লে দিয়ে গেছেন। বোঝা দরকার, করা দরকার। না করলে বোঝাই যায় না।
ভবানীদা—আজ্ঞে, ঠাকুর বলেছেন, এবার আমি পাকা রাস্তা বেঁধে দিয়ে গেলাম।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—হ্যাঁ, তাই তো। আমরা অনেকে সম্পত্তির জন্য, বিষয়-ভোগের জন্য ইচ্ছা করি। কিন্তু কী সুখ তাতে? আমার ইচ্ছা করে—তোরা যারা young man (যুবক) আছিস তারা লোটা-কম্বল নিয়ে রাস্তায় প’ড়ে থাকবি। কোনকিছুর ওপরই আসক্তি থাকবে না। কোনকিছুই কষ্ট ব’লে মনে হবে না, বরং পরম আনন্দ মনে হবে।… আমার তো বয়স বেশী হয়ে গেছে। আমারও ও-রকম থাকতে খুব ইচ্ছা করে।
তিনি ব’লে চলেছেন—আমি তাঁর দীন সেবক। তিনিই আমার প্রভু। তিনি আমার সব। তিনিই আমার অহঙ্কারের বস্তু। নিজে আমি একটা কিছু হয়েছি এ-রকম ভাবই যেন না আসে।
“সকল গর্ব দূর করি দিব
তোমার গর্ব ছাড়িব না।”
তাঁর গর্বই আমার একমাত্র গর্ব। আমরা যদি সব-কিছু প্রভুর জন্য করি, তাহ’লে আর প্রাণায়াম-ট্রাণায়াম কিছুরই দরকার হয় না। এমনি ক’রে চললে মানুষ কোন্ দিক্ থেকে কেমন ক’রে কি হ’য়ে ওঠে টেরই পাওয়া যায় না।
নাম করা কখনই ছাড়তে নেই। নাম করতে হয়। রোজ করতে হয়। দুই, চার, পাঁচ মিনিটের জন্যও করতে হয়—ঠিক সময়ে। আজ বারোটায়, কাল একটায়, অন্যদিন তিনটেয়—এ-রকম করলে হয় না। একইভাবে এক সময়ে কিছুক্ষণের জন্যেও করতে হয়। আমরা যে-সময়ে খাবার খাই, সে-সময়ে খাবার না খেলে শারীরিক organ-সমূহ (অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহ) বিক্ষুব্ধ হ’য়ে ওঠে, মনের রাজ্যেও এ-রকম হয়। আর, নাম করার সময় শরীরকে সুখের মধ্যে রাখতে হয় না। গদীতে বসলাম, fan (পাখা) চালিয়ে দিলাম—তা’ না।
শ্রীকৃষ্ণ সিং—আজ্ঞে, যদি এমন হয় ভোর পাঁচটায় নামে বসি, কিন্তু ঐ সময় যদি ট্রেন ধরতে যেতে হয় তাহলে কী করতে হয়?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—নাম করা অভ্যাস হ’লে পর ও-সব ঠিক হ’য়ে যায়। তখন পাঁচটার ট্রেন না ধ’রে ছ’টার ট্রেন ধরব। আসলে আমার তো তাঁকে চাই। তাই ওইখানে (ঐ আকাঙ্ক্ষা) ঠিক রেখে আর সব adjusted (নিয়ন্ত্রিত) করতে হয়।
শ্যামসুন্দর—কিভাবে adjust করা যায়?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—এই ধর না, আমাদের তো এখানে উৎসবে কত ভাল-ভাল যাত্রা-অভিনয় হয়, কিন্তু আমি সাধারণতঃ দেখি না। দেখতে ইচ্ছাও করে না। কখনও দেখলেও আবার ঠিক সময়ে চ’লে আসি। কিংবা শেষ রাতের দিকে গিয়ে দেখি। আসলে ঠাকুরই সব manage ক’রে দেন। তখন ট্রেনও দাঁড়িয়ে যায় আধঘন্টা। আমাদের শুধু ওই point-এ নিজেদের ঠিক রাখা দরকার।
স্নেহসিক্ত সুরে বললেন—আমি সবাইকে অনুরোধ করি, কখনও কেউ নাম করা বাদ দিও না। ওটাকে মুখ্য ক’রে নিয়ে আর সব কর। কোনমতেই গৌণ হ’তে দেবে না ওটা—আমি সবাইকে অনুরোধ করি।….. আমরা চাই সুখ, চাই আনন্দে থাকতে। ঠাকুরই ব’লে গেছেন—কর, sincerely (নিষ্ঠাসহকারে) কর। ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ যা’ চাইবে, সব পাবে—কর। না ক’রে পাওয়া যায় না। সাতদিন যদি ঠিকমত করতে পার, একদিনও যদি কর, তাহ’লেই বুঝতে পারবে।
[ ইষ্ট-প্রসঙ্গে/তাং-১৬/৭/৭৪ ইং ]
[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা ৩১০ – ৩১৩]