সত্যানুসরণ-এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:
আলস্য থেকেই মূঢ়তা আসে ; আর, মূঢ়তাই অজ্ঞানতা।
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—দীপদ্যোতক আলোচনা করুক।
দীপদ্যোতক বাণীটি আরেকবার পাঠ করল।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—আলস্য মানে কী?
দীপদ্যোতক—কাজ করতে চায় না, শুধু বসে থাকে।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—যে কাজ করতে চায় না, শুধু বসে থাকে তাকে অলস বলে। অলসের ভাব হচ্ছে আলস্য । আর মূঢ়তা মানে? মূঢ় মানে অজ্ঞ, মূর্খ, জড়। যার চলাফেরার ক্ষমতা নাই সে জড়। আলস্য থেকে কী আসে?
দীপদ্যোতক—মুঢ়তা আসে।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—অজ্ঞতা, মূর্খতা, জড়ত্ব আসে। আলস্য থেকে মূঢ়তা আসে কেমন করে? তোমার বাবা তোমাকে একটা কাজ করতে বললেন। তুমি করলে না। বসে আছ তো বসেই আছ। তোমার দিদি কাজটা করে ফেলল। যখনই বলা হয় তুমি কর না। চুপ করে বসে থাক। তাহলে কী হবে? কাজ করার মধ্য দিয়ে জানা হয়, জ্ঞান হয়। যেমন দোকান থেকে তোমার বাবা মুগ ডাল আনতে বললেন। তুমি যদি যেতে দোকানদারের সাথে কথা হত, মুগ ডালের দর জানতে পারতে। শরীরেরও কাজ হয়। নড়াচড়ার ফলে শরীর ভাল থাকে । তোমার বাবারও ভাল লাগত। তুমি কাজ করতে চাও না বলে তোমাকে আর কোন কাজ বলতে চান না। তোমার দিদিকে বলেন বা নিজেই করেন। এতে তোমারই ক্ষতি হচ্ছে। শরীরের নড়াচড়ার কাজ হচ্ছে না। কাজ না করার ফলে অনেক কাজই না-জানা থেকে যায়। অজানা থেকে যায়।
পড়ার উদাহরণও দেওয়া যায়। তোমাকে বই পড়তে বললাম। পড়লে না। আলসেমি করে পড়লে না। বইয়ে কী লেখা আছে জানতেও পারলে না। পড়লে জ্ঞান হয়। অজ্ঞানতা চলে যায়। মূঢ় মানে অজ্ঞ, মূর্খ ৷
একইভাবে শ্রীত্রীপিতৃদেব যথাক্রমে কৃতিদেবতা চৌধুরীকে ও জয়ন্তী বিশ্বাসকে প্রশ্ন করে তাদের দিয়ে ব্যাখ্যা করালেন।
[ইষ্ট-প্রসঙ্গে/তাং-১২/৮/৭৬ ইং]
[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা ২৩৮-২৩৯]