সত্যানুসরণ-এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:
কোন কাজ ক’রে—বিচার-দ্বারা তার ভাল-মন্দ অনুভব ক’রে যে-তাপের দরুন মন্দে বিরতি আসে—তাই অনুতাপ।
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :
শ্ৰীশ্রীপিতৃদেব কৃতিদীপাকে আলোচনা করার আদেশ দিলেন।
কৃতিদীপা—যে-কোন একটা কাজ ক’রে তা থেকে ভাল মন্দ অনুভব ক’রে ঐ কাজ থেকে বিরত হওয়া …….
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—যে-কোন কাজ কী? একটা কাজের নাম বল।
কৃতিদীপাকে নির্বাক দেখে তিনি বললেন—এই ধর, তুমি কোথাও বেড়াতে গেছ। টেবিলের ওপর একটা বই দেখে তুমি তা বাড়ীতে নিয়ে চলে এলে। তখন কী হবে? যখন এই ঘটনা তোমার মনে পড়বে তখন তুমি কী ভাববে?
কৃতিদীপা—ভাবব যে এটা আমি না ব’লে নিয়ে এসেছি …….
—কাজটা ভাল না খারাপ হয়েছে?
—খারাপ।
—হ্যাঁ, তুমি দেখলে যে কাজটা খারাপ হয়েছে; ওটা বলে নিয়ে আসা উচিত ছিল। তখন তোমার মনে একটা অস্বস্তির ভাব সৃষ্টি হবে। ভাববে, ওটা না বলে নিয়ে আসা মোটেই ঠিক হয়নি, ওটা দিয়ে দেওয়া দরকার। সংকল্প করলে আর কখনো ওরূপ করব না—এই হ’ল অনুতাপ। (গুরুদেবনের দিকে চেয়ে) গুরুদেবন কী বল?
গুরুদেবন—একটা বই ছিঁড়ে ফেললাম। সে বইটা অন্যজনের। তখন অনুতাপ এল।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—খুলে বল।
—বইটা ছিঁড়ে ভাবলাম, খুব খারাপ ক’রে ফেলেছি। আর কখনো ওরূপ করব না।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—হ্যাঁ, তোমার মনে একটা তাপের সৃষ্টি হ’ল। একটা জ্বালা। তখন ঠিক করলে, ওরকম আর করব না। তুমি আর ওরকম করলে না কখনো। এই যে জ্বালা, তাই অনুতাপ।
[ ইষ্ট-প্রসঙ্গে/তাং-৩০/১১/৭৬ ইং]
[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা ৩২৩ – ৩২৪]