সত্যানুসরণ-এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:
তুমি ভক্তিরূপ জল ত্যাগ ক’রে আসক্তিরূপ বালির চড়ায় বহুদূর যেও না, দুঃখরূপ সূৰ্য্যোত্তাপে বালির চড়া গরম হ’লে ফিরে আসা মুশকিল হবে ; অল্প উত্তপ্ত হ’তে-হ’তে যদি না ফিরে আসতে পার, তবে শুকিয়ে মরতে হবে।
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :
শ্রীশ্রীপিতৃদেব ষষ্ঠশ্রেণীর ছাত্র ধৃতিবল্লভকে (সিকদার) আলোচনা করতে আদেশ করলেন। জিজ্ঞাসা করলেন— ভক্তি কাকে বলে?
ধৃতিবল্লভ—সৎ-এ নিরবচ্ছিন্ন লেগে থাকাকে ভক্তি বলে।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—আসক্তি কাকে বলে?
ধৃতিবল্লভ—বিষয়ের প্রতি টান।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—বাণীতে কী বলছেন ঠাকুর?
ধৃতিবল্লভ—আসক্তির দিকে গেলে উন্নতি করতে পারি না।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—তাহলে কী হবে?
ধৃতিবল্লভ—তাহলে দুঃখ পাব।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব ধৃতিবল্লভকে সবটা গুছিয়ে বলতে বললেন। সে ইতস্ততঃ করছে দেখে বললেন—ঠাকুর জলকে ভক্তির সঙ্গে এবং আসক্তিকে বালির চড়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন। আসক্তির দিকে বেশি দূর গেলে মানে—
ধৃতিবল্লভ—ইষ্টকাজ ছেড়ে ধন, মান, জনের দিকে যদি চলে যাই—
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—হ্যাঁ, ঐসব কাজে লেগে থাকলে আসক্ত হয়ে পড়বে। সৎ বা গুরুর প্রতি টান তখন আলগা হয়ে আসে। যত বিষয় বা ধন, মান ইত্যাদির দিকে যাব তত ইষ্ট থেকে দূরে চলে যাব। তখন দুঃখ পেতে হবে। তাই বিষয়ের প্রতি আসক্তি বাড়তে দিতে নেই। বালির চড়ায় গেলে ক্রমশ বেলা বাড়ার সঙ্গে বালি গরম হয়, তখন বালি ছেড়ে জলের দিকে আসা জটিল হয়ে ওঠে। সূর্য্যের উত্তাপকে ঠাকুর দুঃখের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাহলে মন সর্বদা ইষ্টে বা সৎ-এ যুক্ত রাখতে হবে।
[ ইষ্ট-প্রসঙ্গে/তাং-২৮/৯/৭৬ ইং ]
[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা ২৭৩ – ২৭৪]