সত্যানুসরণ-এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:
ধর্ম্মকে জানা মানেই বিষয়ের মূল কারণকে জানা ; আর, তাই জানাই জ্ঞান। ঐ মূলের দিকে অনুরক্তিই ভক্তি ; আর, ভক্তির তারতম্য অনুসারেই জ্ঞানেরও তারতম্য হয়। যতটুকু অনুরক্তিতে যতটুকু জানা যায়, ভক্তি আর জ্ঞানও ততটুকু হয়।
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :
শান্তি দাস দা (দুর্গাপুর)—আমার বাঁচাবাড়ার পক্ষে যা helpful হয় তাই জানাই জ্ঞান।
সতীশদা—বিষয়ের মূল কারণটা কি? ধরুন, বই একটা বিষয়, বই কেমন ক’রে হ’লো; এর সঙ্গে আপনার ধর্ম্মের সম্পর্কটা কি?
শান্তিদা—যা’ আমাকে ধারণ করছে তার কারণগুলো যদি জানতে পারি তবে স্থূল সূক্ষ্ম সমস্ত বিষয়ে জানা হবে। কারণ ধর্ম্মের মূলহোতা সেই পরম পুরুষকেই বোঝায়।
শ্রীশ্রীবড়দা—বিষয়ের মূল কারণকে জানা মানে ধর্ম্মকে জানা—এইভাবে আরম্ভ করলেই হয়। ধর, রুইদাস,—যা’র অক্ষর পরিচয়ই নেই। সে কি ধার্ম্মিক হ’তে পারে না? এইটা আলোচনা করলে হয়, যে লেখাপড়া জানেনা সে কি ধার্ম্মিক হ’তে পারে না?
বসাওনদা—জানা মানে to do is to be and to be is to know.
শ্রীশ্রীবড়দা—নৌকায় চেপেছি, মাঝির উপর আমার অটুট বিশ্বাস, যত current থাকুক সে পাড়ি দিতে পারবে। আমায় সব অবস্থায় সামাল দিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। আসল জানাটাই হ’চ্ছে অটুট বিশ্বাস।
বসাওনদা—করাই হওয়া, হওয়াই জানা।
শ্ৰীশ্ৰীবড়দা—কেউ হয়েই আছে। নামও করতে দেখিনি, ধ্যানও করতে দেখিনি, অথচ কাজ করেই যাচ্ছে। বিষয়ের মূল কারণ হ’চ্ছে তাঁকে জানা। বই, খাতা, বাঁশ সব তাঁরই সৃষ্টি। তাঁকে জানতে পারলে যে Laboratory তে molecule দেখে তার চাইতে বেশী আনন্দ পায়। বিষয়ের মূল কারণ-ই ‘তিনি’। তুমি যদি analysis করতে-করতে যাও কত জনমই কেটে যাবে। তুমি প্রেমভক্তির পিছনে-পিছনে যাও, দেখবে জগতটা তোমারই মনে হবে।
[‘যামিনীকান্ত রায়চৌধুরীর দিনলিপি/তাং-১৬/৪/৭৪ ইং]
[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা ১৯০]