সত্যানুসরণ-এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:
“ব’লতে বিবেচনা কর, কিন্তু ব’লে বিমুখ হ’য়ো না।“
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :
আজ মেয়েদের আলোচনায় কৃতিদ্যুতি বিশ্বাসের উপর আলোচনার ভার পড়ল। কৃতিদ্যুতি বলল—কাউকে যদি কিছু বলতে যাই তার আগে বিবেচনা করতে হবে। ভাবতে হবে।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—কী বলতে? কোনও কিছু বলবি, ভাবলি। তারপর কী করে বিমুখ হলি না?
কৃতিদ্যুতি—কাউকে যদি কড়া কথা বলি, তার আগে ভেবে দেখব।
শ্ৰীশ্ৰীপিতৃদেব—ভেবে পরে কড়া কথা বলবি? (সকলের হাসি) কড়া কোথায় পাচ্ছিস এখানে?
—ভাল-মন্দ বিবেচনা করে বলব।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—ভাল বলে যদি বিমুখ হোস! বিমুখ হওয়া মানে কী?
বাণীটি ঠিকমত আলোচনা না হওয়াতে শ্রীশ্রীপিতৃদেব নিজেই বলে দিলেন—আমি তোকে কথা বলব, কথা রক্ষা করবি কি না করবি! কথাটা বললাম, তুই রক্ষা করলি না—বললাম, ভাই, আমাকে দুটো পান এনে দিবি? ভাল করেই বললাম। কিন্তু তুই বললি—না আমার কাজ আছে, যাওয়া হবে না। তাই বলার আগে বিবেচনা করতে হয়, তুই কোন কাজে আছিস—নাকি কোথাও যাচ্ছিস।
একজন হয়ত বলল—ভীষণ বিপদে পড়েছি, টাকা দেবে, মঙ্গলবার দিয়ে দেব। তুই বললি, টাকা নাই ভাই। চোখমুখ দেখেই ধরে ফেললি ওখানে এটাই বলা দরকার। সে রকম কোনও কথাই যখন বলবি, সেটা রক্ষা করবে কি না-করবে ভেবে বলতে হয়। বিমুখ হওয়া মানে—বিফল হওয়া, অকৃতকাৰ্য হওয়া। হরিপদদাকে (দাস) লক্ষ্য করে বললেন—বিমুখ হওয়া মানে?
হরিপদদা—উল্টো দিকে ফিরিয়ে নেওয়া।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—বলে ফেললাম, অথচ কথাটা রাখল না, এতে ভাল হয় না। ও কথাটার কোনও মানে হয় না। নিষ্ঠা, আনুগত্য, কৃতিসম্বেগ থাকলে এগুলো ঠিক-ঠিক বোঝা যায়।
[ পিতৃদেবের চরণপ্রান্তে/তাং-২২/৭/৭৯ ইং]
[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা ৯৯ – ১০০]