সত্যানুসরণ -এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:
“কোনও মতের সঙ্গে কোনও মতের প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নেই, ভাবের বিভিন্নতা, রকমফের—একটাকেই নানাপ্রকারে একরকম অনুভব !“
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :
সুরেশদা—মূল উদ্দেশ্য আনন্দ।
শ্রীশ্রীবড়দা—ধর, সিনেমা দেখতে গেলাম—আনন্দ হ’ল।
সুরেশদা—বাঁচা-বাড়ায়—আনন্দ।
শ্রীশ্রীবড়দা—সকলেই বাঁচতে চায়। তারপর বাড়তে চাওয়া।
সুরেশদা—উদ্দেশ্য—বাঁচা।
শ্রীশ্রীবড়দা—ভাল ক’রে কও । কেউ চুল বড় ক’রে আনন্দ পাচ্ছে, কেউ ছোট ক’রেই।
সুরেশদা—মত মানে ইচ্ছে।
শ্রীশ্রীবড়দা—আমি খিচুড়ি খেতে চাই, গুরুকিংকর বলল—পালং-এর ঝোল। তাহলে, এক মা’র ১০ ছেলে হ’লে তো বিপদ। মানুষ জন্মগ্রহণ করল কি জন্যে?
সুরেশদা—বাঁচা-বাড়ার জন্য।
শ্রীশ্রীবড়দা—তারপর?
সুরেশদা—ঈশ্বর-প্রাপ্তি।
শ্রীশ্রীবড়দা—তাই কও। ঠাকুর বলছেন—হিন্দু-মুসলমান এসব, ঐ পথ দিয়ে যাই কি জন্যে?
সুরেশদা—ঈশ্বর-প্রাপ্তির জন্য। যে পথ দিয়েই যাই—ঐ উদ্দেশ্য এক।
শ্রীশ্রীবড়দা—ভাবের বিভিন্নতা কি?
ভাব শব্দের উৎস “ভূ” ধাতু—মানে, হওয়া। যারা মরুভূমিতে থাকে তারা একরকম হয়, যারা দ্বীপে থাকে তাদের একরকম হয়। আবার যারা—স্থাবর-সঙ্কুল পথে চলে… আকাশের দিকে তাকায়ে থাকলে একরকম ভাব হয়, সমুদ্রের সামনে, মরুভূমির সামনে দাঁড়ালে একরকম ভাব হয়। সেই ঈশ্বর-প্রাপ্তির পদ্ধতিও সেই-রকম। তারপর কি?
সুরেশদা—’একটাকেই নানা প্রকারে’—কোনটা?
শ্রীশ্রীবড়দা—অনুভব।
সুরেশদা—গরম জলের একরকম অনুভব, ঠাণ্ডা জলের একরকম অনুভব।
শ্রীশ্রীবড়দা—কোনটাকে?
গুরুকিংকরদা—কা’কে?
সুরেশদা—ঈশ্বরকে ।
শ্রীশ্রীবড়দা—কেউ ঠাকুর, কেউ God, কেউ আল্লা।
সুরেশদা—কেউ প্রভু, কেউ সন্তান, কেউ বন্ধু।
শ্রীশ্রীবড়দা—কেউ মা।
যামিনীদা—কেউ বস্তু।
শ্রীশ্রীবড়দা—নানা রকমে—সেই ঈশ্বরকেই অনুভব করছেন।
[‘যামিনীকান্ত রায়চৌধুরীর দিনলিপি/তাং-১৭/১২/৭৫ ইং]
[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা নং ৪৪, ৪৫]
[ধর্ম্ম নিয়ে সত্যানুসরণের ১৫, ১৬ পৃষ্ঠার বাণী ব্যাখ্যসহ পড়ুন।]