সত্যানুসরণ-এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:
যার অস্তিত্ব আছে এবং তার বিকাশ আছে —তাই সত্য (Real)।
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :
শ্রীশ্রীপিতৃদেবের নির্দেশে আলোচনা শুরু করলেন ক্ষিতীশদা।
ক্ষিতীশদা—একটা ছোট বীজ থেকে গাছের অঙ্কুর বেরোল, গাছ বড় হয়ে উঠছে—সবাই দেখছে গাছকে—এর বিকাশ আছে। তাই গাছ সত্য।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—প্রেম, প্রীতি, ভালবাসা এ সব তো চোখে দেখা যায় না, —এগুলি কী হবে?
ক্ষিতীশদাকে নিরুত্তর দেখে পরমেশ্বরদা বললেন—এগুলিরও বিকাশ আছে।
শ্রীকন্ঠদা—ব্রহ্ম সত্য জগৎ মিথ্যা—কী রকম?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—ব্রহ্ম সত্য, জগৎও সত্য।
শ্রীকন্ঠদা—যার অস্তিত্ব আছে তার কি কোনদিন লোপ হ’তে পারে?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—সে-কথা তো আসছে না। যার অস্তিত্ব আছে, বিকাশ আছে—তা-ই সত্য। এই পৃথিবীতে ঘর-বাড়ী, লোক- জন, পশু-পাখী এতসব—এদের সঙ্গে যখন প্রীতির বন্ধন হয় তখন পৃথিবীটা মধুর হয়, তাহলে জগৎ মিথ্যা হয় কী ক’রে?
শ্রীশ্রীপিতৃদেবের আসনের পাশেই বসে আছেন পণ্ডিতদা (গুরুপ্রসন্ন ভট্টাচার্য্য)। তিনি সবার কথা শুনে চলেছেন। শ্রীশ্রীপিতৃদেব তাঁকে বললেন,—পণ্ডিত! তুমি তো কিছুই বলছ না।
পণ্ডিতদা—আজ্ঞে, আমার মনে হচ্ছে কোন জিনিস যদি permanently (স্থায়ীরূপে) দেখতে চাই তাহলে whole (সমস্ত)-টাকে জানতে হয়।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—পিতা যেমন পুত্রের মধ্যে থাকে, আবার পৌত্র-প্রপৌত্রের মধ্যেও থাকে। এরকম বংশ পরম্পরায় বিভিন্নভাবে ঐ বাপই বর্তমান থাকে। তারই বিকাশ বিভিন্নরূপে।
সতীশদা—তাহ’লে মিথ্যা বলে কি কোন জিনিস নেই?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—ঠাকুর ‘সত্য’-এর যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তার উল্টোটা ‘অসত্য’-এর সংজ্ঞা। (যেমন, যার অস্তিত্ব নেই এবং তার বিকাশ নেই তাই অসত্য।)
[ইষ্ট-প্রসঙ্গে/তাং-৩/১১/৭৫ ইং]
[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা ৩২৭]