হীরক যেমন ….আপনিই প্রকট হবেন।- ব্যাখ্যা

সত্যানুসরণ -এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:

হীরক যেমন কয়লা প্রভৃতি আবৰ্জ্জনায় থাকে, উত্তমরূপে পরিষ্কার না ক’রলে তার জ্যোতি বেরোয় না, তিনি তো তেমনি সংসারে অতি সাধারণ জীবের মত থাকেন, কেবল প্রেমের প্রক্ষালনেই তাঁর দীপ্তিতে জগৎ উদ্ভাসিত হয়। প্রেমীই তাঁকে ধ’রতে পারে। প্রেমীর সঙ্গ কর, সৎসঙ্গ কর, তিনি আপনিই প্রকট হবেন।

পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :

আজ দাদাদের আলোচনা। শ্রীশ্রীপিতৃদেব জয়ন্তদাকে আলোচনা করার নির্দেশ দিলেন।

জয়ন্তদা—ঠাকুর বলছেন—হীরক যেমন কয়লা প্রভৃতি আবর্জনায় থাকে, তাকে উত্তমরূপে প্রক্ষালন করা দরকার—

শ্রীশ্রীপিতৃদেব—সে তো লেখাই রয়েছে, আলোচনা কর্‌।

জয়ন্তদা—সদগুরু সাধারণ জীবের মত থাকেন, তিনি আবর্জনার মধ্যে থাকেন।

শ্রীশ্রীপিতৃদেব—আবর্জনার মধ্যে থাকেন কেন?

জয়ন্তদা—আমরা বৃত্তিমুখী মানুষ, তাঁর মহিমা তাই বুঝতে পারি না।

জয়ন্তদার আলোচনা বিষয়বস্তু থেকে সরে যাচ্ছে।

শ্রীশ্রীপিতৃদেব বললেন—যা আছে তা-ই আলোচনা কর। ইস্যু বাড়িয়ে ফেলিস না। আবর্জনা কোন্গুলো?

জয়ন্তদাকে নিরুত্তর দেখে শ্রীশ্রীপিতৃদেব বললেন—রোগ, শোক, দুঃখ, কষ্ট, অবিশ্বাস—এইগুলো আবর্জনা। পরমপিতা আসেন, জগতে আমাদের মত সাধারণ জীবের মধ্যেই থাকেন। রোগ, শোক, দুঃখ, কষ্টে তাঁকে পড়তে হয়। পরমপিতা প্রেমময় প্রেমস্বরূপ। যে প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসার চর্চা করে সে তাঁকে অনুভব করতে পারে। সেইজন্য যাদের প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসা আছে, যারা প্রেম-প্রীতির চর্চা করে তাদের সঙ্গ করতে হয়। বৃত্তি-প্রবৃত্তি তো আমাদের আছেই। বৃত্তি-প্রবৃত্তি সব নিয়ে তাঁর সেবায় লাগতে হয়। বৃত্তি-প্রবৃত্তির টান নীচ দিকে নিয়ে যায়। সেই টানকেই ইষ্টের দিকে নিয়ে যেতে হয়। টান তো আছেই। সেই টান যদি ইষ্টসেবায় লাগে তখন কী অফুরন্ত কাজ হয়! আমি যদি প্রেমীর সঙ্গ করি, তখন আমার দৃষ্টি খুলে যাবে।

[ ইষ্ট-প্রসঙ্গে/তাং-৬/৪/৭৮ইং]

[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা ৫৮]

[সদগুরুকে পরীক্ষা বিষয়ক সত্যানুসরণের সকল বাণী (ব্যাখ্যা সহ) দেখুন]