অনুশ্রুতির ১ম খন্ডে “সাধনা” শিরোনামে পৃষ্ঠা ২৯৯ – ৩১৬ পর্যন্ত মোট ৯৩ টি বাণী রয়েছে। নিচে ১ – ৫০ নং বাণীসমূহ দেয়া হলো।
করতে গেলে যা'-যা' ক'রে
হাসিল তাহা হয়,
সেই চলনে চললে তবে
সাধন তা'রে কয়। ১।
ঘৃণা, লজ্জা, ভয়, মান রুদ্ধ করে পরিত্রাণ । ২।
ধৰ্ম্মানুগ দেখলে ন্যায় পালবি অটুট দৃঢ়তায় । ৩।
সাধ যাহার হয় যেমন দড় সাধনাও তা'র তেমনতর । ৪।
ভাবে বলে করে না
সিদ্ধি তা'র আসে না । ৫।
তপের পথে সাধনে যায়
যোগ্যতা তা'র পিছনে ধায় । ৬ ।
সাধ হবে তোর যেমন তোড়ের সাধনায়ও তেমনি, দুঃখ-বাধা হটিয়ে দিয়ে সিদ্ধিও পাবি অমনি । ৭ ।
সিদ্ধি যদি চাও—
করায় তুমি লেগে থেকে
নিরন্তরই ধাও । ৮।
সন্ধিৎসা যা'র নাই— কিসের রে তা'র ভজন-পূজন ? বিপাক সর্ব্বদাই ! ৯ ।
বাধার কথা শুনিস্ নে তুই
ইষ্টপানে চল্,
শতেক অভাব মোচন হবে
বাড়বে বুকে বল ! ১০।
রোখের তোড়ে বৃত্তি যখন
ধরবে তোরে ক’ষে,
সৎ কাজেতে লাফিয়ে পড়িস্
জয় পাবি তুই ব'সে। ১১।
মুগ্ধ আকুল সন্ধিৎসাতে সার্থক তাপস টান, এ-জন হ'তে পায় দুনিয়া জ্ঞানচুয়ান দান । ১২।
স্বস্তিটিকে বজায় রেখে' লক্ষ্য রেখে সৎ মহান, তপ, দান, ধ্যান যা' পারিস্ কর ঐ পথেতেই অভ্যুত্থান । ১৩।
বৃত্তিনেশার অমোঘ টান উৎসপানে ব'য়ে, সার্থকতায় ইষ্টেতে ধায় আত্মকর্ম্মক্ষয়ে । ১৪।
স্বভাব রাখিস্ সুশীল-কোমল ঝোঁকটি সৎ-এ কড়া, হৃদয় রাখিস্ ইষ্টস্বার্থে অটুটভাবে ধরা, তালটি রাখিস্ চল-নজরে এড়িয়ে বৃত্তিদায়, এমন চালে চললে সে-জন শ্রেয়ের দিকেই ধায় । ১৫।
অনুরাগের ঝলক-ঝোঁকে আত্মোৎসর্গে নিবেদনে আসলে নতি অনুগতি প্রেষ্ঠস্বার্থী উদ্দীপনে, সন্ধানী এই অনুরাগে নিয়ে সেবার সমীক্ষা প্রেষ্ঠনীতির পথে চলাই মন্ত্রপূত দীপন দীক্ষা । ১৬।
সৎদীক্ষা তুই এক্ষুণি নে ইষ্টেতে রাখ সম্প্রীতি, মরণ-তরণ এ-নাম জপে কাটেই অকাল যমভীতি । ১৭।
দীক্ষা-বিয়ের আনুষ্ঠানিক সাম্যভাঙ্গা মন্থরতা, আনেই জীবন-কৰ্ম্মশালায় মন্দ-বধির অলসতা । ১৮।
দক্ষিণা দিতে
যেমনি টান,
দক্ষতাতেও
তেমনি প্রাণ। ১৯।
দীক্ষা নিয়ে সাধ্যমত দক্ষিণা দেয় না যে-ই । সাধনা তা'র মর্ম্মাহত ব্যর্থসিদ্ধি সে-ই । ২০।
দীপ্ত সম্বেগ ফুল্লপ্রাণে সামর্থ্যে দান যেমনটি, দক্ষিণা সত্যি কয় তা'কেই আর কিছু নয় তেমনটি । ২১।
ইষ্টসম্বেগ দৃপ্ত হ'য়ে বৃত্তিরই একমুখতায় দেওয়ার স্পৃহার উচ্চেতনে চলৎ-স্নায়ু দীপ্তি পায়, অমন দীপ্ত সম্বেগেতে কাজে করলে উচ্ছ্রয়ণ ঝোঁকসম্বেগে দক্ষ হ'য়ে দক্ষিণায় হয় উৎক্রমণ, এইটি হচ্ছে দক্ষিণার তুক এ না হ'লে সবই মাটি, বুঝে-সুঝে চলবি ঋত্বিক্ এইতো আমার কথা খাঁটি; ভালবাসার দৃপ্ত সম্বেগ সেবা-দানের বিচ্ছুরণে দক্ষ হ'য়ে চলবে তখন,— লয়ই পাবে এর বিহনে । ২২।
দক্ষিণা দেয় না দীক্ষা নেয় দক্ষতাটি মুষড়ে' খায় । ২৩।
আবেগভরা দক্ষিণাটি
যেমনতর দেখতে পাবে,
দীক্ষা হ'ল কার্য্যকরী
তেমনতরই বুঝা যাবে। ২৪।
প্রাণশক্তি দীপ্ত হ'য়ে
দানে করে উৎসেচন,
দক্ষিণাটির উপভোগ তাই
প্রাণের আনে উচ্ছলন। ২৫।
দক্ষতাকে উচ্চেতিয়ে দক্ষিণাতে ফুল্ল ক'রে তোলে না এমন আচার্য্যটি দক্ষতাকে নিকাশ করে; উৎস-অবশ দক্ষধারা হ'য়ে হয় সে ঋদ্ধি-হারা যজমানের অপ্রাতুল্যে দুর্ব্বিপাকে মরেই মরে। ২৬।
ঊষানিশায় মন্ত্রসাধন
চলাফেরায় জপ,
যথাসময় ইষ্টনিদেশ
মূর্ত্ত করাই তপ । ২৭।
ইষ্টপদে টান না হ'লে জপ করিস বা কী ? জনমভোর করলেও জপ লাভ হবে ফাঁকি ! ২৮।
বৃত্তিস্বার্থী বহুরতি
বিচ্ছিন্নতায় টানে,
ইষ্টানুগ বহুরতি
তোলে ঊর্দ্ধপানে । ২৯ ।
জপ তখনই হয়—
জপ্যচিন্তা হৃদে রেখে
সার্থকতার পন্থা দেখে
কাজে নিছক ফুটিয়ে যবে
অর্থ উপজয় । ৩০।
তুই মনে করিস্ ধ্যান-জপ
যাজন করিস্ মুখে,
কাজে তা'দের ফুটিয়ে তুলিস্
বহিস্ জীবন সুখে । ৩১।
ইষ্টস্বার্থী প্রাণটি নিয়ে
জপ করলে রে তুই,
সার্থকতায় উঠবি ফুলে'
মলিনতা ধুই'। ৩২।
জপ করিস্ তুই পুজো করিস্
সহজ জ্ঞান তো ফুটল না,
ঠিকই জানিস্ জপ-পূজোর নেই
নিত্য কর্ম্মে মূর্চ্ছনা। ৩৩।
ইষ্ট আর ইষ্টস্বার্থে মনের আনাগোনা, এমনি ক'রেই ধ্যানে আসে চিত্ত-সংযোজনা। ৩৪।
পুনঃ পুনঃ সেইটি করা যা'তে পাওয়া ফলে, অমনতর সম্বেগকেই ইচ্ছা করা বলে; লক্ষ্য আছে অভীষ্টেতে করায় ফুটে উঠল না, উদ্দেশ্য লোকে কয় তা'রেই ওইটি ইচ্ছার সূচনা; কল্পনাতে পাওয়ার চিন্তা সম্বেগেতে নেই, ওইটি হ'ল চিন্তাটি সেই উদ্দেশ্যেরই খেই; ভেবে-চিন্তে বুদ্ধি ক'রে কথায় ফোটে কাজে নয়, মনন-করণ কয় তা'কেই চাহিদা যা'তে উপজয়। ৩৫।
যে-বিদ্যে তোর আছে জানা দক্ষতা যা' মজুত, ইষ্টার্থে তা' লাগিয়ে যা না বাড়বে গুণে অযুত । ৩৬।
বৃত্তিসেবার গর্ব্বী দানে বর্দ্ধনাটা টোটে, ইষ্টসেবী সৌকর্য্যেতে উন্নতিটি ফোটে । ৩৭।
তুই যদি তোর ইষ্ট-পথে
চলতে নারিস্ পাকা,
তোরে ধ'রে চলছে যা'রা
তা'রাও চলবে ফাঁকা। ৩৮।
ইষ্টমুখীন অটুট টানে মহৎ পরাক্রমে, অভাব-বাধা অন্তরায়ের বিনা অতিক্রমে— কেমন ক'রে জ্ঞান হবে রে জীবন-যশে উঠবি বেড়ে ? পরাক্রমশীল অটুট টানেই হয় রে আসল যোগ, ইষ্টস্বার্থ-প্রতিষ্ঠাতেই নিত্য-নবীন ভোগ । ৩৯।
সন্ধিৎসা-পথে সেবা নিয়ে ইষ্টস্বার্থে নজর দিয়ে পূরণ-গড়ন পথে চলে দীপন প্রসার মন, জ্ঞানের যোগী তা'কেই বলে ইষ্টতালে যে-জন চলে গবেষণার আলোক হাতে চলেই অনুক্ষণ । ৪০।
প্রেষ্ঠ লাগি' কৰ্ম্ম করে
তাঁ'রই স্বার্থে মন,
কাজের ফলে প্রেষ্ঠ-পূজায়
প্রীত দীপ্ত র'ন,
কর্মযোগের হয় সে যোগী
দীপনপ্রাণ সে প্রেষ্ঠ-ভোগী,
জেল্লায় তা'র জগৎ আলো
রয়ই অনুক্ষণ । ৪১।
বস্তু-হারা গুণ যেমন ভাবতে পারা যায় না, ব্রহ্মাবিৎ বিনেও তেমনি ব্রহ্ম পাওয়া হয় না। ৪২।
প্রেষ্ঠ-নিদেশ সম্পূরণে
যেমনতর দক্ষতা,
বৃত্তিগুলো সার্থকতায়
লভেই তেমন পক্কতা। ৪৩।
ধ্যান ভাল হয় কোথায়?
হৃদয়-আবেগ উপচে
যেথা ইষ্টপানেই ধায় । ৪৪।
ইষ্টস্বার্থই ভুল হ'ল তোর মূর্ত্তি-চিন্তাই ধরলি, ধ্যানটি গেল গোল্লায় কিন্তু এমন করাই করলি ! ৪৫।
সূক্ষ্ম-সার্থক বিভেদ-বিচার সফল অনুভব, ক্ষিপ্র চিন্তা স্মৃতি-কৰ্ম্ম, ধ্যানেরই বিভব । ৪৬।
জয়ই যদি চাস্— অভাব-বাধা অতিক্রমি' ইষ্টপানে ধাস্ । ৪৭।
সুফল লভি’ চলার সাথে অভিজ্ঞতা অর্জ্জন, অমনি ক'রে চলাই জানিস্ সাধুর আদত লক্ষণ । ৪৮।
গুচ্ছে-গুচ্ছে বৃত্তিগুলি
ইষ্টে ন্যস্ত যতই হবে,
নিত্যনুতন ব্যক্তিত্বটা
গজিয়ে নিত্যানন্দে র'বে । ৪১।
দীক্ষা নিয়ে নিয়মমত চললে তবে হয় উন্নত । ৫০।