সত্যানুসরণ শ্রীশ্রীঠাকুরের শ্রীহস্তলিখিত বাণী। এর প্রথমেই দুর্বলতা নিয়ে শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন। সত্যানুসরণের ৭, ৮, ৯ পৃষ্ঠায় এর বর্ণনা রয়েছে। নিচে হুবহু তার লেখাটি তুলে ধরা হলো।
সর্ব্ব প্রথম আমাদের দুর্ব্বলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ক’রতে হবে। সাহসী হ’তে হবে, বীর হতে হবে। পাপের জ্বলন্ত প্রতিমূর্তি ঐ দুর্ব্বলতা। তাড়াও, যত শীঘ্র পার, ঐ রক্তশোষণকারী অবসাদ-উৎপাদক Vampire কে (ভ্যাম্পায়ার একজাতীয় বাদুড়; ইহারা নির্ব্বিবাদে ঘুমন্ত জীবজন্তুর রক্ত শোষণ করিয়া থাকে)। স্মরণ কর তুমি সাহসী, স্মরণ কর তুমি শক্তির তনয়, স্মরণ কর তুমি পরমপিতার সন্ধান। আগে সাহসী হও, অকপট হও, তবে জানা যাবে, তোমার ধর্ম্মরাজ্যে ঢোকবার অধিকার জন্মেছে।
[উপরের “সর্ব্বপ্রথম…. জন্মেছে” বাণীটির ব্যাখ্যা]
এতটুকু দুর্ব্বলতা থাকলেও তুমি ঠিক-ঠিক অকপট হতে পারবে না; আর, যতদিন তোমার মন-মুখ এক না হচ্ছে, ততদিন তোমার মলিনতার গায়ে হাতই প’ড়বে না।
[উপরের “এতটুকু….প’ড়বে না” বাণীটির ব্যাখ্যা]
মন-মুখ এক হ’লে আর ভিতরে গলদ জমতে পারে না-গুপ্ত আবর্জনা ভাষায় ভেসে উঠে পড়ে। পাপ গিয়ে তার ভিতর বাসা বাঁধতে পারে না।
[উপরের “মন-মুখ…পারে না” বাণীটির ব্যাখ্যা]
হটে যাওয়াটা বরং দুর্ব্বলতা নয়কো, কিন্তু চেষ্টা না করাই দুৰ্ব্বলতা। তুমি কোন কিছু ক’রতে প্রাণপণে চেষ্টা করা সত্ত্বেও যদি বিফলমনোরথ হও ক্ষতি নাই। তুমি ছেড়ো না, ঐ অম্লান চেষ্টাই তোমাকে মুক্তির দিকে নিয়ে যাবে।
[উপরের “হটে যাওয়াটা…নিয়ে যাবে” বাণীটির ব্যাখ্যা]
দুর্ব্বল মন চিরকালই সন্দিগ্ধ, —তারা কখনই নির্ভর ক’রতে পারে না। বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে— তাই প্রায়ই রুগ্ন, কুটিল, ইন্দ্রিয়পরবশ হয়। তাদের নিকট সারাটা জীবন জ্বালাময়। শেষে অশান্তিতে সুখ-দুঃখ ডুবে যায়, —কি সুখ, কি দুঃখ ব’লতে পারে না; ব’ললে হয়ত বলে ‘বেশ’, তা’ও অশান্তি ; অবসাদে জীবন ক্ষয় হ’য়ে যায়।
[উপরের “দুর্ব্বল মন…ক্ষয় হ’য়ে যায়” বাণীটির ব্যাখ্যা]
দুর্ব্বল হৃদয়ে প্রেমভক্তির স্থান নেই। পরের দুর্দ্দশা দেখে, পরের ব্যথা দেখে, পরের মৃত্যু দেখে নিজের দুর্দ্দশা, ব্যথা বা মৃত্যুর আশঙ্কা ক’রে ভেঙ্গে পড়া, এলিয়ে পড়া বা কেঁদে আকুল হওয়া—ও-সব দুর্ব্বলতা। যা’রা শক্তিমান্, তা’রা যা’ই করুক, তাদের নজর নিরাকরণের দিকে—যাতে ও-সব অবস্থায় আর না কেউ বিধ্বস্ত হয়, প্রেমের সহিত তা’রই উপায় চিন্তা করা—বুদ্ধদেবের যা’ হয়েছিল। ঐ হ’চ্ছে সবল হৃদয়ের দৃষ্টান্ত।
[উপরের “দুর্ব্বল হৃদয়ে…..দৃষ্টান্ত” বাণীটির ব্যাখ্যা]
তুমি ব’ল না তুমি ভীরু, ব’ল না তুমি কাপুরুষ, ব’ল না তুমি দুরাশয়। পিতার দিকে নজর কর, আবেগভরে বল—ওগো, আমি তোমার সন্তান; আমার আর জড়তা নেই, আর দুর্ব্বলতা নেই, আমি আর কাপুরুষ নই, আমি আর তোমাকে ভুলে নরকের দিকে ছুটে যাব না, আর তোমার জ্যোতির দিকে পিছন ফিরে ‘অন্ধকার’ ‘অন্ধকার’ ব’লে চীৎকার ক’রব না।
[উপরের “তুমি ব’ল না তুমি ভীরু….ক’রব না” বাণীটির ব্যাখ্যা]
English Version
First of all, we must wage war on weakness. We must be bold and brave;
for weakness is sin incarnate! Drive it away at once—this depressing,
blood- sucking vampire! Say you are bold, the offspring of Might;
believe—you are a son of Father the Supreme! Before all else, be daring,
be sincere. Then it is clear you have the right to enter the kingdom of
heaven.
With the least weakness you cannot be truly sincere, and so long as your
thoughts and words do not agree, the dirt within shall not be touched.
Once word and thought become alike, the dirt cannot collect within. The
hidden rubbish floats up in words and sin cannot remain within.
Failure need not be weakness; to fail to try is weakness. If despite your all-
out effort in anything, you fail to succeed, no harm; carry on; don’t stop!
That unblemished effort must carry you toward the goal.
Weak minds are always suspicious. They can never trust. Their faith has
been lost; so they are generally sickly, tricky, sensually inclined. For them,
all of life is a burning. Ultimately joy and sorrow are dissolved in despair.
What is pleasure, what is pain, they cannot differentiate. If asked, they
sigh, “What’s the difference!” Ever restless, their lives deteriorate in
dullness.
Love and regard has no place in the weak heart. To be anxious about one’s
own distress, suffering or death on seeing that of others and to be broken,
bewildered and distraught thereby is weakness. But the eyes of those who
are strong are always seeking for a remedy in everything they do and in
such a way that no one is shattered while in that condition. To find the
remedy with love, as did Lord Buddha, is the sign of a courageous heart.
Say not you are timid! Say not you are a coward! Say not you are evil-
minded! Look towards Father! Speak fervently, “Oh, I am Your son.
Within me there is no more dullness, no more weakness. I am no longer a
coward! Never again forgetting You will I run towards hell with my back
towards Your light crying, ‘Darkness, darkness, darkness’!”