সত্যানুসরণের ৬৯ – ৭২ পৃষ্ঠায় শ্রীশ্রীঠাকুর ব্রহ্ম, ভগবান, সদগুরু, সৎ, সন্ন্যাস, সমাধি, ধ্যান, যোগ, ঋষি, মুক্তি, আধ্যাত্মিকতা, প্রকৃত বিচার, যুক্তি, অনুতাপ, তীর্থ, পুণ্য, পাপ, সত্য, সসীম, অসীম – এগুলোর সংজ্ঞা দিয়েছেন। অবশেষে শান্তি! শান্তি! শান্তি! বলে তিনি সত্যানুসরণ শেষ করেছেন। তিনি বলেন…
যা’ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হ’য়ে যা’-কিছু হ’য়ে তাই আছে— তাই ব্ৰহ্ম।
[উপরের “যা…ব্রহ্ম” বাণীটির ব্যাখ্যা]
জগতের সমস্ত ঐশ্বৰ্য্য—জানা, ভালবাসা ও কৰ্ম্ম—যাঁর ভিতর সহজ-উৎসারিত ; আর যাঁর প্রতি আসক্তিতে মানুষের বিচ্ছিন্ন জীবন ও জগতের সমস্ত বিরোধের চরম সমাধান লাভ হয়—তিনিই মানুষের ভগবান্।
[উপরের “জগতের…ভগবান” বাণীটির ব্যাখ্যা]
ভগবানকে জানা মানেই সমস্তটাকে বুঝা বা জানা।
[উপরের “ভগবান…জানা” বাণীটির ব্যাখ্যা]
যাঁর কোন মুৰ্ত্ত আদর্শে কৰ্ম্মময় অটুট আসক্তি—সময় বা সীমাকে ছাপিয়ে তাঁকে সহজভাবে ভগবান্ ক’রে তুলেছে—যাঁর কাব্য, দর্শন ও বিজ্ঞান মনের ভাল-মন্দ বিচ্ছিন্ন সংস্কারগুলিকে ভেদ ক’রে ঐ আদর্শেই সার্থক হ’য়ে উঠেছে—তিনিই সদ্গুরু।
[উপরের “যাঁর…সদগুরু” বাণীটির ব্যাখ্যা]
যাঁর মন সৎ বা একাসক্তিতে পূর্ণ—তিনি সৎ বা সতী।
[উপরের “যাঁর…সতী” বাণীটির ব্যাখ্যা]
আদর্শে মন সম্যক্-প্রকারে ন্যস্ত করার নাম—সন্ন্যাস।
[উপরের “আদর্শে…সন্ন্যাস” বাণীটির ব্যাখ্যা]
কোন বিষয়ে মন সম্যক্ভাবে লেগে থাকার নাম সমাধি।
নামে মানুষকে তীক্ষ্ণ করে আর ধ্যানে মানুষকে স্থির ও গ্রহণক্ষম করে।
[উপরের “নামে…করে” বাণীটির ব্যাখ্যা]
ধ্যান মানেই কোন-কিছু একটা চিন্তা নিয়ে লেগে থাকা। আর, তা-ই আমরা বোধ ক’রতে পারি—যা-ই আমাদের লেগে-থাকাটার বিক্ষেপ এনে দেয়, কিন্তু ভেঙ্গে দিতে পারে না।
[উপরের “ধ্যান…না” বাণীটির ব্যাখ্যা]
বিরক্ত হওয়া মানেই বিক্ষিপ্ত হওয়া।
[উপরের “বিরক্ত…হওয়া” বাণীটির ব্যাখ্যা]
তীক্ষ্ণ হও, কিন্তু স্থির হও—সমস্ত অনুভব ক’রতে পারবে।
[উপরের “তীক্ষ্ণ…পারবে” বাণীটির ব্যাখ্যা]
কোন-কিছুতেই যুক্ত হওয়া বা একমুখী আসক্তির নামই—যোগ।
[উপরের “কোন…যোগ” বাণীটির ব্যাখ্যা]
কোন-কিছুর দ্বারা প্রতিহত হ’লে যা’ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত ক’রতে চায়—তাই অহং (self)।
[উপরের “কোন…অহং” বাণীটির ব্যাখ্যা]
অহংকে শক্ত করা মানেই অন্যকে না-জানা।
[উপরের “অহং…জানা” বাণীটির ব্যাখ্যা]
বস্তু-বিষয়ক সম্যক্ দর্শন দ্বারা তন্মননে মনের নিবৃত্তি যাঁদের হয়েছে—তাঁরাই ঋষি।
[উপরের “বস্তু…ঋষি” বাণীটির ব্যাখ্যা]
মনের সর্ব্বপ্রকার গ্রন্থির (সংস্কারের) সমাধান বা মোচন হ’য়ে এক-এ সার্থক হওয়াই—মুক্তি।
[উপরের “মনের…মুক্তি” বাণীটির ব্যাখ্যা]
যে-ভাব ও কৰ্ম্ম মানুষকে কারণমুখী ক’রে দেয়—তাই আধ্যাত্মিকতা।
যে-তুলনা অন্তর্নিহিত কারণকে ফুটিয়ে তোলে —তাই প্রকৃত বিচার।
[উপরের “যে…বিচার” বাণীটির ব্যাখ্যা]
কোন বস্তুকে লক্ষ্য ক’রে তার স্বরূপ-নির্দ্দেশক বিশ্লেষণই—যুক্তি।
[উপরের “কোন…যুক্তি” বাণীটির ব্যাখ্যা]
কোন কাজ ক’রে—বিচার-দ্বারা তার ভাল-মন্দ অনুভব ক’রে যে-তাপের দরুন মন্দে বিরতি আসে—তাই অনুতাপ।
[উপরের “কোন…অনুতাপ” বাণীটির ব্যাখ্যা]
যেখানে গমন ক’রলে মনের গ্রন্থির মোচন বা সমাধান হয়—তাই তীর্থ।
[উপরের “যেখানে…তীর্থ” বাণীটির ব্যাখ্যা]
যা’ ক’রলে অস্তিত্বকে রক্ষা করা হয়— তাই পুণ্য।
[উপরের “যা…পূণ্য” বাণীটির ব্যাখ্যা]
যা’ ক’রলে রক্ষা হ’তে পতিত হয়—তাই পাপ।
[উপরের “যা…পাপ” বাণীটির ব্যাখ্যা]
যার অস্তিত্ব আছে এবং তার বিকাশ আছে —তাই সত্য (Real)।
[উপরের “যার..সত্য” বাণীটির ব্যাখ্যা]
যা’ ধারণা ক’রতে মনের নিজত্ব অক্ষুণ্ণ থাকে —তাই সসীম।
[উপরের “যা…সসীম” বাণীটির ব্যাখ্যা]
যা’ ধারণা ক’রতে গিয়ে মন নিজত্ব হারিয়ে ফেলে—তাই অনন্ত বা অসীম!
শান্তি ! শান্তি ! শান্তি !