বৃত্তি-নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অনুশ্রুতি ১ম খন্ড

অনুশ্রুতির ১ম খন্ডে “বৃত্তি-নিয়ন্ত্রণ” শিরোনামে পৃষ্ঠা ১৭৯ – ১৮৪ পর্যন্ত মোট ২৯ টি বাণী রয়েছে। বাণীসমূহ নিচে দেয়া হলো।

বহুর সেবায় দিন খোয়ালি 
চলল জীবন বেমালুম,
এক-স্বার্থী না হওয়াতে
জীবন হ'ল শুধু জুলুম। ১।
প্রবৃত্তি তোর যাই না থাকুক
সৎ-নিয়ন্ত্রণ না হ'লে,
সত্তাকে সে ফেলবে খেয়ে
মরবি ভয়ে তা'র ফলে। ২।
বৃত্তি সব সু-এর পথে
চালিয়ে নিয়ে সার্থকতায়,
মন্দমতি তা'রাও অনেক
উন্নতিরই আলোক পায়। ৩।
প্রার্থনাতে কইলি কত 
করলি নাকো কাজে,
ফুটলো ওটা কল্পনাতে
ফলটি পেলি বাজে । ৪।
শাসন করে সংযমশীল
পাপবুদ্ধি যত,
সেবায় আনে সম্বৰ্দ্ধনে
চরিত্র উন্নত । ৫।
মন্দ যা' 'তা' কায়দা ক'রে
করবি এমন চুর,
ভাল ছাড়া করবি না আর
তবেই বাহাদুর। ৬।
যা' যা' করলে মন্দ হয়
করিস্ না তা'য় করবি ভয়;
         ভুলেই যদি ক'রেও থাকিস্ 
         জন্মের মত সে-পথ ছাড়িস্; 
                যাসনে কভু সে-পথে আর 
                পালিস্ নিষেধ বিধাতার। ৭।
ভাল-মন্দ যা'-কিছু সব 
নিজের সাথে মিলিয়ে নিবি,
ভাল যা' তা' আঁকড়ে ধ'রে
মন্দগুলির নিপাত দিবি। ৮।
ভয় এড়িয়ে জয়ের পথে
যতই তুই চলবি রে,
নির্ভয় হ'বি নির্ভর পাবি
শক্তিসুলভে থাকবি রে। ৯।
বাধা যদি নিয়ন্ত্রণে 
শুভই করে দান,
তবেই জানিস্ ওরে পাগল
তুই রে শক্তিমান। ১০।
দুঃখ-কথার হামবড়ায়ে
কীই বা হবে তোর,
লোকের ভাল হয় যাহাতে
তাই নিয়ে তুই ঘোর । ১১।
দোষের রঙে র'ঙেই যদি
থাকে তোর নজর,
ভালর দিকে ঘুরিয়ে তা'রে
স্বচ্ছ-শুদ্ধ কর্। ১২।
শোন্ রে ওরে পাগলা বেকুব
হামবড়াই-চাল এখনও ছাড়,
পড়শীদিগের ভালয়-মন্দে
থাকিস্, দেখিস, ধারিস্ ধার। ১৩।
অহঙ্কারের পণ্ডামিতে
দাবাতে এলে কেউ রুখে,
তোর প্রতি টান বাড়িয়ে দিবি
নম্রমদির জ্ঞানতুকে। ১৪।
করার ধারায় দেখবি ঝোঁক
সংস্কারের সেই তো রোখ,
ঝোঁকটি যা'তে ঘায়েল হয়
সেই বৃত্তিরই বিপর্য্যয়;
বিপর্য্যয় যখনই পাবি
ইষ্টস্বার্থে শুধরে নিবি,
বিপর্য্যয়ী বৃত্তি যত
গ্রথিত ইষ্টে কর্ সতত,
গ্রথিত বৃত্তি দেয় না পাক
ফেলে না খালে, করে না থাক্। ১৫।
ঝগড়াঝাঁটি মনের বেমিল
কা'রও সঙ্গে হ'লেই জানিস,
অবিলম্বে তা'র কাছে গিয়ে
আবেদনে কহিস্, শুনিস্। ১৬।
যে-দিক দিয়েই থাক্ না রে ঝোঁক
হ'তে রে তুই উন্নীত,
তা'রই তালে পা ফেলে চল্
প্রেষ্ঠে হ'য়ে সঙ্গীত । ১৭।
লোক-সমক্ষে বললে যাহা
অনেকের হয় ক্ষতি,
এমন বলার লোভটি থেকে
থাকিস্ দূরে অতি। ১৮।
সাপ নিয়ে তুই খেলবি যদি
ওরে বেদের ছেলে,
মন্ত্র-ওষুধ ঠিক রাখিস্, নয়
মরবি ছোবল খেলে! ১৯।
দুর্ব্বলতায় ঠিকরে দিয়ে
দাঁড়া রে ওরে দাঁড়া,
রক্তচোষা বাদুড়গুলো
তাড়া রে ওরে তাড়া। ২০।
ঠক্-চালাকী বৃত্তিবাদ
নিকেশ কর, নিপাত কর,
আগলহারা আগুন-রাগে
কৰ্ম্ম নিয়েই ধৰ্ম্ম ধর । ২১।
যে-চাহিদায় পেতে গিয়ে
যে-আচারে চলতে হয়,
তাই বুঝে না চলতে পারা
বেকুব-বুদ্ধি তা'রে কয়। ২২।
সু-এর সাথে যোগ দিয়ে তুই
সফল কর তা'কে,
আসবে সুযোগ সুফল সাথে
জয়-গম্ভীর হাঁকে। ২৩।
চলা-বলা যা'-কিছু তোর
ইষ্টস্বার্থ-সমর্থনে,
অস্তিত্বকে বিনিয়ে চলবি
ওই পথেতে নিয়ন্ত্রণে;
শাস্ত্রনীতি ন্যায়পরতা
চলায়-বলায় পড়বে ধরা,
দুনিয়াটা হাসির ভরে
উঠবে হ'য়ে উজল-করা। ২৪।
কথা দিলেই করতে হবে
নিশ্চয় জানিস্ মনে,
না পারলে তুই বুঝিয়ে তারে
জানাবি সেইক্ষণে । ২৫।
পথ ভেবেই তুই শ্রান্তিভরে
ক্ষান্ত হ'য়ে যাসনে দমে,
মানুষ কি রে চলতে পারে
না করে ভর স্ব-উদ্যমে? ২৬।
তা'র অবস্থায় তুই কী করতিস্ 
এইটি খতিয়ে নিয়ে,
বলবার করবার যা' থাকে কর্
সমবেদনা দিয়ে;
এ না ক'রে ভুল ক'রে তুই
দিলে কাউকে ব্যথা,
অনুতাপে শুধরে নিবি
ফিরে করিস্ না তা'। ২৭।
সহ্য যত করবি, হ'বি
ক্ষমার অধিকারী,
ক্ষতি না করে করিস্ ক্ষমা
শক্তি পাবি ভারি। ২৮।
চাল-চলন তোর ঋজু রেখে
চলিস্ অনুক্ষণ,
পড়শীদিগের স্বার্থ হ'য়ে
বাঁধিস্ তা'দের মন;
ওৎপাতা সব ঠকপ্রতারক
থাকেই চারিধার,
ছাইয়ের মত উড়বে তা'রা
করবে কী তোমার! ২৯।