সত্যানুসরণ -এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:
“তুমি অন্যের নিকট যেমন পেতে ইচ্ছা কর, অপরকেও তেমনি দিতে চেষ্টা কর—এমনতর বুঝে চ’লতে পারলেই যথেষ্ট—আপনি সব্বাই তোমাকে পছন্দ ক’রবে, ভালবাসবে।“
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :
শ্রীশ্রীবড়দা—সত্যেন বসু এসে বারে বারে ঠাকুরের কাছে বললেন—আপনি একটু উপদেশ যদি দেন। ঠাকুর বললেন আমি উপদেশ-টেশ বুঝি না।
আশা রায়—আমি চাই সবাই আমার সঙ্গে মিষ্টি করে কথা বলুক, আমি যেমন চাই তেমনতর। কিন্তু আমারও অন্যের সঙ্গে মিষ্টি ও শান্ত ব্যবহার করা লাগবে।
শ্রীশ্রীবড়দা—ধর, তুমি আমার সঙ্গে ভাল ব্যবহার কর, আমি বিনিময়ে যদি খারাপ ব্যবহার করি?
আশা—ভেবে দেখব, এমন করল কেন? হয়ত তার মন খারাপ ছিল।
শ্রীশ্রীবড়দা—তখন তুমি কি করবে?
আশা—চুপ করে থাকবো (সবার হাস্য)। ঠাকুরের আদর্শ মত খারাপ ব্যবহার করবো না।
অজিত গাঙ্গুলীদা—এমন মানুষ আছে—যার কাছে উপকার পেল বার বার তারই অপকার করে যাচ্ছে।
শ্রীশ্রীবড়দা—ঐ যে করছে সে নিজের কাছেই পতিত হচ্ছে। কথা আছে—“তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন?”
ননীদা—ঠাকুর বলেছেন চিরকালই তোমাকে করতে হবে।
শ্রীশ্রীবড়দা—হ্যাঁ, চিরকালই করতে হবে। শিশুপালকে ১০০ বার ক্ষমা করা হয়েছিল। আমি আসছি, দেখি একজন কুলি বিরাট ভারী মোট মাথায় নিয়ে ভগবানের উদ্দেশ্যে কেবল গালাগালি দিচ্ছে। আমি যেয়ে তার মোটটা নামিয়ে দিতে সাহায্য করলাম—সামান্য ব্যাপার,—কী কৃতজ্ঞ তাতে! বললাম, শুধু শুধু তাঁকে গালাগাল দিচ্ছিলে কেন?
সে বলে—আজ মোট পেয়েছি, ছেলেপেলেকে খাওয়াতে পারব। অনেকদিন বোঝাই পাই না। তাকে বললাম—আর ভগবানকে গালাগালি দিও না। তিনি কি অন্যায় করলেন? বরং বলবে প্রত্যেকদিন—ভগবান একটু কাজ দিও।—খুশী হয়ে গেল সে।
[‘যামিনীকান্ত রায়চৌধুরীর দিনলিপি/তাং-৬/১/৭৬ ইং]
[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা ৬৫]