অনুভূতি প্রসঙ্গে অনুশ্রুতি ৪র্থ খন্ড

অনুশ্রুতি ৪র্থ খন্ডে “অনুভূতি” শিরোনামে পৃষ্ঠা ৪২ – ৪৬ পর্যন্ত ২৭ টি বাণী রয়েছে।
নিচে বাণীসমূহ দেয়া হলো।

স্পন্দনাই তো জীবনদ্যুতি
যা'তে দাঁড়িয়ে হয় বিভব,—
এ সঙ্গতির বিনায়নে
থাকে স্মৃতি হয় অনুভব । ১।
বাস্তবতার সঙ্গতি নিয়ে
অনুভূতি যে-সব হয়,
সেইগুলিরই নিয়মনায়
ধী ক্রমশঃই বৃদ্ধি পায় । ২।
স্বার্থলোভে অন্ধ-বধির
মত্ত মোহে থাকলে ঢাকা,
ভগবত্তার স্ফুরণ কভু
দেখতে নারে সে দুর্ভাগা । ৩।
অনুকম্পী অনুবেদনায়
নিজেকে সাধে না যে,—
স্বার্থলোলুপ ব্যর্থ নেশায়
নিষ্ঠা পালায় ত্রাসে । 8 ।
নিষ্ঠানিপুণ ভজনসেবা
স্বার্থ বলি দিয়ে
ক'রলি কবে ? ভগবত্তা
বুঝবি যে রাগ নিয়ে । ৫।
মূঢ় যা'রা তাঁ'কে কিন্তু
মানুষ ব'লেই জেনে থাকে,
ভূত-ঈশ্বর সেই সে মহান্—
তপ-বিহীন কি জানে তাঁকে ? ৬।
নিষ্ঠানিপুণ নয়কো যা’রা
নাইকো যা'দের তথ্য-জ্ঞান,
বলে—মানুষে বিভু-আবির্ভাব
কুসংস্কারের অজ্ঞদান । ৭।
উপকথার আবর্জ্জনায়
মহৎ জীবন দেখো না,
বাস্তবতার সাড়ায় এলে
তা'কে দেখতে ভুলো না । ৮।
বর্ত্তমানকে কেন্দ্র ক'রে
ভূত-ভবিষ্যৎ যা'রাই দেখে,
রূপ-রকম আর ধৃতিচলন
সার্থকতায় সবই রাখে । ৯ ।
জানবি যা'কে ভাবায়-বলায়
ধৃতি-কৃতি-বীক্ষণায়,
তবে তা'র বিভব উথলে ওঠে
দীপ্ত জ্ঞানের উজ্জ্বলায় । ১০।
বাস্তবে কিছু হ'তে গেলেই—
নিষ্ঠা-আনুগত্য-কৃতির
সঙ্গতিশীল অনুনয়নে
উদ্ভবই হয় সেই স্থিতির । ১১।
নিষ্ঠা-অনুগতি-কৃতি
যেমনতর দৃঢ় যা'র—
ধৃতিচলন তেমনই হয়,
আসে বিভব-উপচার । ১২।
নিষ্ঠা-অনুগতি-কৃতির
সঙ্গতিশীল সংশ্রয়ণ
ইষ্টে অটুট হ'য়ে থাকলে—
সদবিভবের হয় বর্দ্ধন । ১৩।
বোধ-গুরুত্ব যেমন হয় যাঁ'র
লোকের গুরুও তেমনি তিনি,
বোধ-বিভাতি-বিভাবনায়
সঙ্গতিশীল থাকেন তিনি । ১৪ ।
লীলাখেলা চালচলনের
যতই যেথা নিখুঁত জ্ঞান,
দীপন শোভায় তৃপণ বেগে
তেমনই তো হয় অভিধ্যান । ১৫।
অপ্রত্যাশী শ্রদ্ধাভরা 
প্রীতির অবদান,
নেওয়া-দেওয়ার মধ্যে থাকেন
বিধি—ভগবান্ । ১৬।
অনুরাগী সেবাই জানিস্—
ভজন নামে অভিহিত,
সদ্-আচরণ ব্যবহার-ধীতে
বিভুই তো হন প্রকটিত । ১৭।
ভক্ত-হৃদয়-বৃন্দাবন— 
ভগবানের নিবাস জানিস,
ভজন-রাগের সুসাধনে
হৃদয়ে তাঁ'কে ডেকে আনিস্ । ১৮।
নিপট-ভক্তি যেথায় থাকে
ধৃতিচৰ্য্যা উছল ধায়,
সেই ভক্তের অন্তরেতেই
ভগবত্তা বিকাশ পায় । ১৯।
জ্যোতিঃ মানেই বিকাশ কিন্তু,
রং ফলিয়ে দেখা নয়,
দেখার কিন্তু পরিচয়ই—
বাস্তবে যা' যেমন রয় । ২০।
কল্পনারই বিনা কাজলে
যথাযথ দেখা যেটা,
নিরঞ্জন-ব্রহ্ম তা'কেই বলে
বাস্তবতায় ফোটে সেটা । ২১।
ব্রহ্মজ্যোতিঃ আলোর ধমক
এটা কিন্তু নয়ই নয়,
সঙ্গতিশীল বোধদীপ্তিতে
প্রতিভাত হয়ই হয় । ২২।
ব্রহ্মজ্ঞানের আলো মানেই
বৃদ্ধিটাকে দেখা-বোঝা
আঁকাবাঁকা যে-সব বোধ
সব-কিছুকে ক'রে সোজা । ২৩।
বিভুর বিভব জানিস্ কিন্তু
হওয়াতেই হয় উৎসারিত,
শিষ্ট-সুন্দর বিনায়নী
মূৰ্ত্তিতে হয় বিকশিত । ২৪।
ঈশ্বরই কিন্তু বি-ভু—বিকাশে
প্রতি ব্যষ্টিতে বিকশিত,
বিকাশ দিয়ে ঊর্জ্জনা তা'র
পদে-পদেই প্রকটিত । ২৫।
ভগবত্তা কোথায় আছেন
কেমন হ'য়ে কী মহিমায়—
আবেগনিষ্ঠ আকাক্ষাতে
তাঁ'কে কিন্তু বোঝা যায় ;
ভক্তি-জ্ঞানের উছল দীপ্তি
ঐ মহিমায় লুকিয়ে থাকে,
আচরণে উদ্ভাসিত—
নিষ্ঠানিপুণ গুণের ডাকে ;
হয়তো দেখবে এক-লহমায়
তোমার কাছে দাঁড়িয়ে সে,
কটু-মন আর কুটিল-চোখে
পাও না হয়তো তাঁ'র দিশে । ২৬।
সব যা'-কিছুর শক্তি যিনি—
সৰ্ব্বশক্তিমান,
ধারণ-পালন-সুসম্বেগে
সবাকেই চালান,
আবেগ-উচ্ছল স্বতঃস্রোতা—
কোথায় তিনি নাই ?
কৃতিতপা ধৃতিই তাঁহার,
সাত্বত আসন তা'ই । ২৭ ।

Loading