অসৎ-নিরোধ নিয়ে অনুশ্রুতি ২য়

অনুশ্রুতির ২য় খন্ডে “অসৎ-নিরোধ” শিরোনামে পৃষ্ঠা ২০২ – ২১০ পর্যন্ত মোট ৪৯ টি বাণী রয়েছে ।
নিচে বাণীসমূহ দেয়া হলো।

অসৎকে তুই জেনে রাখিস্ 
বুঝে-সুঝে তা'র অনুচলন,
হেলায় নিরোধ ক'রে তা'রে
করিস্ সতের অনুসরণ। ১।
ওরে বলি, শোন্ আবার তুই 
ইষ্ট-আপদ যা'ই না হোক,
ঊর্জ্জী তেজে প্রাণ দিয়েও তা'
থাকেই যেন রোখার ঝোঁক । ২।
ইষ্টার্থটির শত্রু পেলেই 
ঊর্জ্জী তেজে পরাক্রমে,
ধরবি ক'ষে, আনবি বশে
করবি নিপাত সকল ভ্রমে । ৩।
বাঘনখে তুই অত্যাচারের
ছিঁড়ে-কুড়ে মর্ম্মখানা,
পুরুষত্বের পূরণ-বিভায়
সব-হৃদয়ে দিবিই হানা। ৪I
ঊর্জ্জীতেজা দক্ষ তালে
ওজোদীপ্ত সুবোধনায়,
আচার্য্যেরই আপদ-বিপদ্‌
ঝেঁটিয়ে তাড়া সুব্যবস্থায়। ৫।
অহঙ্কারে ধাক্কা দিয়ে 
শুধরে দেওয়া বড়ই কঠিন,
প্রীতির নিপুণ নিয়ন্ত্রণে
সহজই হয় তা' দিন-দিন । ৬।
বিক্রমে হও বীর্য্যবান্ 
করতে অসৎ-নিরোধ,
সব যা'-কিছু খতিয়ে দেখে
বাড়াও ধৃতির বোধ। ৭।
বিক্রমেতে বিশাল হ'বি
অসতেরে করবি সৎ,
পরিচর্য্যায় স্পর্শি' হৃদয়
ধরাবি তা'য় সতের পথ। ৮।
প্রীতির খাতির ক'রে কা'রো
অসৎ-বুদ্ধির দিস্ না লাই,
চলবে কৃতি জাহান্নমে
অসৎ কিন্তু পাবেই ঠাঁই । ৯।
ধৃতিচৰ্য্যা নিয়ে চল
দৃপ্ত-সুষ্ঠু নজর রেখে,
রুদ্ধ কর অসৎ যা' সব
বাস্তবেতে শুনে-দেখে। ১০।
সৎ-চলনায় নজর রেখো
অসৎ যা' সব ক'রো রোধ,
অন্তরেতে সজাগ রেখে
ধৃতি-চলনার শুভ বোধ। ১১।
ঊর্জ্জী নেশায় টগব'গে চল্ 
নিরোধ ক'রে অসৎ যা',
বোধবৃত্তি আঁকড়ে ধ'রে
দূর ক'রে দে মলিনতা। ১২।
শঠেরে নিরস্ত ক'রো
খল প্রতিদানে—
চাণক্যের নীতিবাক্য
বহুজন জানে,
এই শুধু নহে শেষ—
বিজ্ঞ-নিরোধনে,
ধৃতিচর্য্যা জাগাইও
তা'র দুষ্ট মনে। ১৩।
সৎকে করবি সম্বর্দ্ধনা
সেবাচৰ্য্যী নন্দনায়,
অসৎ যা' তা'র করবি নিরোধ
বজ্রগভীর ঊর্জ্জনায়। ১৪।
যে-জীবনে যেটুকু সৎ
উসকে তুলিস্ বর্দ্ধনায়,
অসৎ যা' তা'র খতম করিস্
দক্ষচতুর মার্জ্জনায়। ১৫।
মিষ্টি কথা, তীক্ষ্ণ বোধ
সেই ব্যবহারেই অসৎরোধ। ১৬।
অসৎ-নিরোধ-বৃত্তি রাখিস্ 
প্রস্তুত তরতরে,
সৎ-চলনে থাকবি সাবুদ
বিমল ঝরঝরে। ১৭।
সদ্-ব্যাভারই জীবনীয় হয় 
কূট-কুশলী যতই হো'ক,
অসৎ যা' সব নিরোধ ক'রে
তোল্ বাড়িয়ে সতের ঝোঁক। ১৮।
চোর-জুয়াচোর নষ্টবুদ্ধি
সাবধান থাকিস্ তা'দের হ'তে,
সজাগ থাকিস্, সজাগ রাখিস্
না হয় আপদ কোনমতে । ১৯।
অসৎ জনায় দুষ্ট ব'লে
করিস্ যদি অভিহিত,
কিছুতেই তা'র হিত হবে না
অসৎ-ভরা রইবে চিত;
সৎ কথা বল্ ঐ অসতে
সৎ কর্ম্মে কর্ নিয়োজন,
কৃতিমুখর আপ্রাণতায়
করলে হবে পরিবর্ত্তন। ২০।
দুষ্ট যাহা, নষ্ট যাহা
বিষাক্ত যা' জীবনে তোর,
এড়িয়ে চ'লে কায়দায় এনে
থাক্ বেঁচে তুই জীবন-ভোর । ২১।
মরণ-তরণ যা' পাবি তুই
নিজে ক'রে এস্তামাল,
সর্ব্বনাশা যা'-কিছু সব
ফেল্ ক'রে তুই পয়মাল। ২২।
কু-এর স্বার্থে মাঙ্গলে দয়া
কু-এই চ'লল জীবন-স্রোত,
ইষ্টনেশায় রুখলি না তা'য়
রুখবে কে তোর বৃত্তি-সোঁত। ২৩।
জীবন-ধ্বংসী অশুভ যা'
ফেউ-এর মতন পিছু যায়,
নিরোধ ক'রে সে-সবগুলি
জীবন-চলার কর্ উপায়। ২৪।
বাঁচা-বাড়ার সংস্কারের
বিরুদ্ধেতে যা'-ই দাঁড়াক্—
তাড়িয়ে দে, তাড়িয়ে দে,
জীবনচৰ্য্যা বাঁচিয়ে রাখ্। ২৫।
অসৎ চেনো, সৎকে জান,
সত্তাপোষক হ'য়ে চল,
অসৎ-নিরোধ সত্তাপোষণ
সার্থকতায় হও উছল। ২৬।
জীবনটাকে আগলে ধ'রে
মরণ যা' তা' কররে দূর,
তাথৈ তালে সৎ-নাচনে
তাড়িয়ে দে সব পাপের হুর। ২৭।
অসৎটাকেও জানিস্ রেখে
বাস্তবতায় দেখে-শুনে,
সৎপথেতে চ'লবি সদা
ধৃতিমুখর সেবার টানে। ২৮।
অসৎ যা' তা'য় জানবি এমন
বেশ ক'রে তুই বুঝে-শুনে,
অসৎ-বাগে যা'য় না পড়িস্
ঘাবড়ে না যাস্ নিরোধ-টানে। ২৯।
দোষগুলি সব আড়াল রেখে
মিষ্টি নিরোধ যত পারিস,
তেমনি ক'রেই চলা-ফেরায়
জুটবে আপদ কমই জানিস্। ৩০।
অসূয়া ও নিন্দা-কথায়
হোস্ না রঙিল জীবন-চলায়—
বাস্তবতায় বুঝবি যেমন
চলিস্ তেমনি চিন্তা-চলায়। ৩১।
সঞ্চারণা এমনি করিস্ 
যুক্ত চারু ভাব-দীপনায়—
জীবনে সে ভুলতে নারে,
ভোলেই যেন ভুলে যাওয়ায়। ৩২।
দুষ্য কথা যা'র যা' থাকুক
মুখের পাশে আনবি নে,
দুষ্যটাকে নিরোধ করিস,—
পারিস্ তো তা'য় ছাড়বি নে । ৩৩।
ভ্রষ্টতারণ আগ্রহটা
সাত্বতীরই অবদান,
নষ্টে-ভ্রষ্টে প্রীতিচর্য্যায়
যেমন পারিস্ করিস্ ত্রাণ। ৩৪।
অসৎকে সৎ করতে গিয়ে
সৎকে পাপে ডুবাস্ নে,
অসৎকে সৎ করাই পুণ্য
সৎকে খতম করিস্ নে। ৩৫।
সত্য বলে, মিথ্যে বলে
কী স্বার্থেতে অমন কয়,
খুঁজে-পেতে বুঝে রাখিস্
কেনই বা তা'র অমন হয়। ৩৬।
কেন মানুষ কী যে করে
খুঁজে-পেতে দেখিস্ বুঝে,
তেমনি ক'রে তা' নিয়ন্ত্রণ
করিস্ সেটা সেমনি সুঝে। ৩৭।
স্বার্থভরা ভাববিভূতি
হাতিয়ে করবি নিয়ন্ত্রণ,
অনুরাগটি যেমন বাড়ে
তেমনই তো বিবর্ত্তন। ৩৮।
সত্তা যেমন আগ্রহশীল
ভাববৃত্তির উচ্ছলায়,
সত্তাবিভা—অসৎ-নিরোধ
আসেও তেমনি ক্ষমতায়। ৩৯।
অসৎকে তুমি নিয়ে চললে
নিজের সহিত পরিবেশ,
সংক্রামিত হ'য়ে উঠবে
পাবে কত দুঃখ-ক্লেশ। ৪০।
কৃতি-চৰ্য্যায় ধৃতিকে সাধ্
অসৎ-বাধাকে রাখিস্ তাজা,
কৃতার্থে বুক উপচে উঠুক
প্রীতির সজ্জায় হৃদয় সাজা । ৪১।
গরম হ'বি কোথায়?—
অসৎ-নিরোধ সন্দীপনা
দুর্ব্বিনীত যেথায়। ৪২।
অশুভ আর অসৎ যেটা
জীবনের তা'ই ক্ষতি আনে,
মানুষকে তা' সাবাড় ক'রে
যায়ই নিয়ে তলছা টানে। ৪৩।
অসৎ-নিরোধ করবি যেথায়
শক্ত হ'বি হৃদয় নিয়ে,
মানুষটাকে করিস্ তাজা
অশুভকে তাড়িয়ে দিয়ে । ৪৪।
অত্যাচারকে করিস্ দমন
অত্যাচারীকে দীপ্ত ক'রে,
পেলব প্রীতি মাখিয়ে তা'কে
পারিস্ যদি তুলিস্ ধ'রে। ৪৫।
পাপীর প্রতি অনুকম্পী
আদরভরা আপ্যায়নে,
পুড়িয়ে ফেলিস্ যা'-কিছু পাপ
অনুতাপের তপ-তাপনে। ৪৬।
সৎ-এর ধূয়োয় অসৎ সেধে
বাঁচা-বাড়ার ধ্বংস আনে,
অসৎ তাহার ক্রমে বেড়ে
বাঁচা-বাড়ায় আঘাত হানে। ৪৭।
পোষক কিংবা প্রিয়ের প্রতি
করলে মলিন কটাক্ষপাত,
শুনে যে-জন না দেয় জবাব
প্রিয়পোবী নয় সে নেহাত। ৪৮।
তুর্য্যতানে বিবেক-বুদ্ধি
সব যা'-কিছুর ব্যবস্থায়,
অসৎ-নিরোধ ক'রে তড়িৎ
আনিস্ নিরেট বন্ধুতায়। ৪৯।

Loading