ইষ্টভৃতি নিয়ে অনুশ্রুতি ১ম খন্ড(৩১-৪০)

অনুশ্রুতির ১ম খন্ডে “ইষ্টভৃতি স্বস্ত্যয়নী” শিরোনামে পৃষ্ঠা ৩১৭ – ৩৩৪ পর্যন্ত মোট ৭৪টি বাণী রয়েছে।
এর মধ্যে ৩১ – ৪০ নং বাণী নিচে দেয়া হলো।

ইষ্টভরণ ধান্ধা যাহার
        মগজ থাকে জুড়ে',
সব প্রবৃত্তি ইষ্টার্থে তা’র
        বিনিয়ে ওঠে ফুঁড়ে ;
সমাহারী দীপ্ত নেশায়
        কৰ্ম্ম-সন্দীপনা
ঐ আবেগে অটুট হ'য়ে
      আনে সম্বর্দ্ধনা;
স্থবির স্নায়ুর স্বস্থ-টানে
       চলৎ স্নায়ুর গতি
সংবেদনার সংক্রমণে
       দেয়ই সাড়ার নতি
আত্মম্ভরি দরিদ্রতা
      অলস ঠুনকো মান
অমনি নেশার ক্রমোৎকর্ষে
      লভেই তেমনি ত্রাণ
সংগ্রাহী তা'র এমনি আবেগ
      শক্তি-সরঞ্জামে,
বৃদ্ধি-সহ কুশলতায়
      আপৎকালে নামে
ওড়ে বিপদ ছাইয়ের মতন
      ঝলক দীপন রাগে
সম্পদে সে অটুট চলে
      ইষ্ট-অনুরাগে। ৩১।
বাঁচা-বাড়ার চাস্ যদি বর
নিখুঁতভাবে স্বস্ত্যয়নী ধর্,
        আপদ-বিপদ দরিদ্রতা
        যতই আসুক কাটবেই তা',
সুখ-সমৃদ্ধি দিন-দিন
উঠবে ফুটে হ'য়ে নবীন
আয়ুটারও হ'য়ে আয়
সম্ভব যা' তা' পাবি তা'য়
শ্রীবিগ্রহের মন্দির ভেবে
          যত্ন করিস্ শরীরটাকে,
সহনপটু সুস্থ রাখিস্
          বিধিমাফিক পালিস তা'কে
প্রবৃত্তি তোর যখন যেমন
          যেভাবেই উঁকি মারুক
ইষ্টস্বার্থ-প্রতিষ্ঠাতে ঘুরিয়ে দিবি
          তা'র সে ঝোঁক;
যে-কাজে যা' ভাল ব'লে
         আসবে মনে তৎক্ষণাৎ
হাতে-কলমে করবি রে তা'
         রোধ ক'রে তা'র সব ব্যাঘাত;
পাড়াপড়শীর বাঁচা-বাড়ায় 
         রাখিস্ রে তুই স্বার্থটান,
তা'দের ভাল'য় চেতিয়ে তুলিস্
         ইষ্টানুগ ক'রে প্রাণ;
নিজের সেবার আগে রোজই
         শক্তি-মত যেমন পারিস্,
ইষ্ট-অর্ঘ্য ভক্তিভরে
         শুচিতে নিবেদন করিস্;
এই নিয়মে নিত্যদিন
         প্রতি কাজেই সর্ব্বক্ষণ
স্বস্ত্যয়নীর নিয়মগুলি
         পালিস্ নিয়ে অটুট মন;
ত্রিশটি দিন পূরে গেলে
          মাসিক অর্ঘ্য সদক্ষিণায়
ইষ্টভোজ্য পাঠিয়ে, বাকি
          মজুত রাখবি বর্দ্ধনায়;
চিরজীবন এমনি ক'রে
          ইষ্টস্থানে হয় নিরত,
তা'কেই বলে স্বস্ত্যয়নী
          সবার সেরা মহান ব্রত। ৩২। 
যত পারিস্ নিত্য রাখিস্
         ইষ্টনেশায় ক'রে ভর্
স্বস্ত্যয়নীর এই  নিয়মের
         থাকিস্ কড়া অনুচর;
কড়ি গুণে হিসাব ক'রে
         করিস্ না রে নিবেদন,
যেদিন যেমন প্রাণ চায় তাই
         করতে থাকিস্ উৎসর্জ্জন;
অর্থ কতই পড়বে জমা
         দেখতে-দেখতে কত হয়,
এই নিয়মে চ'লেই দেখিস্
         স্বস্ত্যয়নীর দিগ্বিজয় । ৩৩।
স্বস্ত্যয়নীর পাঁচ পাঁতি
চরিত্রেতে রাখ্ গাঁথি, '
         প্রতি কথা ব্যবহারে
         দীপ্ত ক'রে তোল্ তা'রে;
এমনি যদি চলতে পারিস্
জীবনটা তুই দেখেই নিস্,
দুঃখ-আঘাত-অভিঘাত
যতই কেন করুক উৎপাত
          তোর চলনা চলতেই র'বে
         এতে অন্য নাহি হবে । ৩৪।
স্বস্ত্যয়নী নিয়েই যদি
          আগের করা দুষ্কর্ম্ম
পেয়েই ধরে হুমকি দিয়ে
          করতে চায় হতভম্ব,
আগলভাঙ্গা বুকের জোরে
          স্বস্ত্যয়নী ধরিস্ ক'ষে,
তুকে-তাকে দেখিস্ কেমন
          আপদ-বিপদ যাবেই ধ্ব’সে । ৩৫।
পুরুষকার আর দৈবমিলন 
          ইষ্টভৃতে হয়,
উন্নয়নের অদব চলায়
          স্বস্ত্যয়নী বয়;
ঈশানদেবের শক্ত মেয়ে 
          ঐ রে স্বস্ত্যয়নী,
ওর পূজোতে ধর্ম্ম বাঁধা 
          আপদ-বিমৰ্দ্দনী । ৩৬।
ঐ অদূরে মানসচক্ষে 
          দ্যাখ দাঁড়িয়ে স্বস্ত্যয়নী, 
ত্রিশূল-মাথায় বজ্র আগুন
          রুদ্র হাসে দৈন্যঘ্ননী; 
পাঁচটি আয়ুধ মন্ত্ৰতেজে 
          চকমকে ঐ অঙ্কে গোঁজা, 
অমর-করা বর-অভয় 
          দৈন্যবিষের পুণ্য ওঝা; 
এখনও তোর সময় আছে 
          ওঠ্ রে মেতে স্বস্তিগানে, 
মায়ের পূজোয় বুক বেঁধে নে 
          স্বস্ত্যয়নী নাচুক প্রাণে । ৩৭।
যে-ই যত বড় হোক না কেন 
          ভর দুনিয়ার মাঝে, 
যেমন করেই হোক জানিস্ তা'য়
           স্বস্ত্যয়নীই আছে । ৩৮।
সুচলনার একটিই পথ 
          ওই স্বস্ত্যয়নী, 
নিখুঁতভাবে চলবি যত 
          শ্রেষ্ঠ-উদ্দীপনী । ৩৯।
স্বস্ত্যয়নী যে-জন করে 
          জীবন-বৃদ্ধি তা'রেই ধরে—
ধর্ম্ম থাকে বাহন হ'য়ে তা'র
          বাঁড়া-বাড়া উন্নয়নে
          মহাজ্যোতি-বিকিরণে
          অন্তরায়ে করেই চুরমার । ৪০।