ইষ্টভৃতি নিয়ে দীপরক্ষী ৫ম খন্ড

ইষ্টভৃতি নিয়ে দীপরক্ষী ৫ম খন্ডের ৫৭, ২৮৯ পৃষ্ঠায় আলোচনা রয়েছে। নিম্নে তা দেয়া হলো।

৫ই শ্রাবণ, মঙ্গলবার, ১৩৬৬ (ইং ২১/০৭/১৯৫৯)

……
হাউজারম্যানদা মায়ের চিঠির বিষয়বস্তু বললেন। কিছুক্ষণ পরে উপস্থিত একটি ভাই প্রশ্ন করল—যজন, যাজন ও ইষ্টভৃতির ঠিক ঠিক মানে কী?

শ্রীশ্রীঠাকুর—যজন হ’ল to work out the order of the master, the Love-Lord (প্রভু যিনি, প্রিয়পরম যিনি, তাঁর আদেশ বাস্তবে মূর্ত্ত ক’রে তোলা)। আর যাজন হ’ল to convince others for carrying out that order (অপরকে ঐ আদেশ পালনে প্রত্যয়ী ক’রে তোলা)। মানে, ঐরকম আদেশ কেন হ’ল, তা’ পালন না করলে কী হয়, ইত্যাদি বিষয়ে মানুষকে convince (বিশ্বাস-উৎপাদন) করা। আর ইষ্টভৃতি হ’ল daily offering (নিত্য উৎসর্গ অবদান), যা’ সংগ্রহ ক’রে ইষ্টকে নিবেদন করতে হয়। এটা হ’ল prime urge of life (জীবনের প্রাথমিক সম্বেগ)। এইগুলি করার ভিতর-দিয়ে মহাভীতি যা’তে যা’তে হয় সেগুলি এড়িয়ে চলা যায়। মহাভীতি মানে যদি মৃত্যুভয় হয়, তাহলে নিষ্ঠাভরে যজন-যাজন-ইষ্টভৃতি করতে-করতে আমি discern (নির্দ্ধারণ) করতে পারি clue to death কী (মরণের সূত্র কী, অর্থাৎ কী কী কারণে মৃত্যু বা বিনাশ আসে)।

আমি—আপনি একদিন বলেছিলেন, মহাভীতি থেকে বহুত ভীতি কথাটা more correct (অনেক ঠিক)।

শ্রীশ্রীঠাকুর—হ্যাঁ, বহুত ভীতি হ’লে ভালই হয়। আর মহাভীতি মানেও ছোট থেকে বড় বড় সবরকমেরই ভয়।

জনৈক ভক্ত—গীতায় আছে “মামেবৈষ্যসি সত্যং তে।” এখানে “এষ্যসি” মানে কী?

শ্রীশ্রীঠাকুর—ও কথাটার মানে হ’ল, তুমি আমাতে বসবাস করবে।

২১ অগ্রহায়ণ, সোমবার, ১৩৬৬ (ইং ৭/১২/১৯৫৯)

…..
এরপর ইষ্টভৃতি সম্পর্কে কথা উঠল। শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন—আমরা যে ইষ্টভৃতি করি, সেই সম্বন্ধে রবি ঠাকুরও লিখেছেন। ইষ্টভৃতি নাম দেন নি। কিন্তু ঐরকম লিখেছেন। তার মানে ঐরকম conception (ধারণা) ছিল। (বিশুদাকে বললেন) দেখা না ক্যান আদিত্যকে।

বিশুদা (মুখোপাধ্যায়) রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন নামক বইখানি এনে তার মধ্যে ‘ত্যাগের ফল’ নামক প্রবন্ধ থেকে নির্দ্দিষ্ট অংশটি প’ড়ে শোনালেন। পড়ার পরে শৈলেনদা বলছেন—বুঝ ছিল খুব। এক জায়গায় বলেছেন, ভারতের সনাতন ব্রাহ্মণত্ব অচিরেই জাগ্রত হবে।

শ্রীশ্রীঠাকুর—আমারও তাই মনে হয়।

তারপর একটু আনমনাভাবে বলছেন—কিন্তু রকম দেখে কেমন মনে হয়।
…..

Loading