জীবনবাদ প্রসঙ্গে অনুশ্রুতি ৪র্থ খন্ড (১০১-১৫৬)

অনুশ্রুতি ৪র্থ খন্ডে “জীবনবাদ” শিরোনামে পৃষ্ঠা ৫৫ – ৮৬ পর্যন্ত ১৫৬ টি বাণী রয়েছে।
নিচে ১০১ – ১৫৬ নং বাণীসমূহ দেয়া হলো।

তৃপ্তিভরা মুখের হাসি 
দীপ্তিভরা চক্ষু তোর,
উছল-করা মুখের কথা—
শুনে সবাই হো'ক না ভোর । ১০১।
তোমার তৃপ্তি ছিটিয়ে যাক্
প্রতিটি বুকের স্তরে-স্তরে,
পরিচর্য্যার পরিবেশনে
জীবন-সস্পন্দ উঠুক স্ফুরে । ১০২।
দরদীর মত অনুকম্পাশীল,
অসৎ-নিরোধে কৃতান্ত,
অস্তিবৃদ্ধির পূজারী হয়ে,
থাক সুখে সবে চলন্ত । ১০৩।
দীপ্য নেশা বিনিয়ে-বিনিয়ে
দিগন্তেতে উধাও ছোট্‌,
দেখে-শুনে বুঝে-সুঝে
ধর্ সেটাই যা'র শুভ জোট । ১০৪ ।
ঊর্জ্জীতেজা হ'য়ে দাড়া
ভরসা আসে সবার যা'তে,
লক্ষ্য নিয়ে ব্যবস্থা করিস্
দৈন্যবিহীন থাকিস্ তা'তে । ১০৫।
শুদ্ধজন্মা, দিব্যকৰ্ম্মা
যা'রাই হ'য়ে থাকে,
বরেণ্য পথে তা'রাই চলে
সত্তাসেবী ডাকে । ১০৬।
দৃপ্ত যে-জন গুরুগৌরবে
গুরুচর্য্যাই প্রধান যা'র,
ধার ধারে কি অসৎ কিছুর ?
উন্নয়ন-চৰ্য্যাই প্রধান তা'র । ১০৭।
আচার্য্যনিষ্ঠ চর্য্যাশ্রমী
নিদেশবাহী জীবন যা'র,
লাখ ব্যতিক্রম আসুক না কেন—
শ্রমচলনেই স্থিতি তা'র । ১০৮।
শিষ্ট যা'দের কৃতিবিভব,—
নিষ্ঠা-অনুগতি-কৃতি
উপচে উঠে সব হৃদয়ে
আনে চৰ্য্যা, আনে ধৃতি । ১০৯ ।
নিষ্ঠা-অনুগতি-কৃতি
চাওয়া-পাওয়ার পূর্ব্বরাগ,
শক্তিশালী ও-তিন যেমন
তেমনি সবল জীবন-যাগ । ১১০।
নিষ্ঠা-অনুগতি-কৃতির
আবেগ নিয়ে চল,
পাবি কত অবাক্ মাণিক
জমবে বুকে বল । ১১১।
ঐতিহ্য-সংস্কার সংস্কৃতিতে
শক্ত যা'দের অনুরতি,
ইষ্টনিষ্ঠ সম্ভাব্যতায়
বয়ই তা'দের জীবন-গতি । ১১২।
বুদ্ধচতুর নিষ্ঠা নিয়ে
ব্যক্তিত্বে অর্ঘ্য দেয়,—
ফলেই বিভব সদ্-দীপনায়,
সুষ্ঠু যা' তাই নেয় । ১১৩।
এক আদর্শের মানুষ হ' তুই
অটল নিটোল থেকে তাঁতে,
সার্থকতার সুবিন্যাসে,—
সাত্বত কল্যাণ হয় যা'তে । ১১৪ ।
সার্থকতার সঙ্গতিতে
বোধবিবেকের ঊর্জ্জনায়,
ধ'রে-ক'রে দেখ না চ'লে—
ফোটে কত কী মূৰ্চ্ছনায় । ১১৫।
আয় ছুটে আয়, দেখনা কেমন
ফুরফুরে বয় দখিন হাওয়া,
স্ফুরণ ক'রে নে সেধে নে
সিদ্ধ হয় যা'য় জীবন-বওয়া । ১১৬।
বন্দনাময় নন্দনা তোর
ফুটুক হৃদয়ে অনিবার,
আলোর মত ছিটিয়ে পড়ুক
সে-নন্দনা সকল ধার । ১১৭ ।
তৃপ্ত রাগে অমর হাঁকে
উদ্যমে দে গুরুর জয়,
কথায়-কাজে মিলিয়ে তাঁকে
সব জীবনে আন্ অভয় । ১১৮।
গুরুর কৃতি-বিনায়নে
মূর্ত্ত ধৃতি আন্ ব'রে,
জীবনটা তোর হোক্ ধৃতিময়
বাড়ুক ধৃতি তোকে ধ'রে । ১১৯।
ধর্ম্মটাই তো সাম্যের গোড়া
ধৃতির পোষণ দিয়ে সে—
বাঁচাবাড়ার তৎপরতায়
দুঃখ-আপদ্ ঢের নাশে । ১২০।
জীবন-ধৃতি যা'তে বাড়ায়
প্রতি বিশেষে পরস্পরে,
হাতে-কলমে—যেথায় এটা
সাম্য সেথায় ক্রমেই বাড়ে । ১২১ ।
জীবন-বৈশিষ্ট্যের মানটি যেমন
প্রয়োজনও তা'র তেমনতর,
সেই প্রয়োজনের আপূরণাতেই
সাম্যবাদের ধৃতি দড় । ১২২।
শ্রদ্ধাপ্রীতি-অনুকম্পা
সৎ-এর প্রতি আসলে তোর,—
মনেই রাখিস, ছাড়িস না-কো,
চর্য্যা করিস্ জীবনভোর । ১২৩।
সৎ-আচাৰ্য্য বা অধ্যাপকে
শ্রদ্ধারতি কৃতি-সহ
দক্ষনিপুণ নিদেশ-পালায়
হয় না জীবন দুৰ্ব্বহ । ১২৪।
লোকচর্য্যী হৃদয় যা'দের
তা’রাই কিন্তু লোকমহান্,
নিষ্ঠানিপুণ সেবায় তা'দের
তুমিও হবে সৎ শ্রীমান্ । ১২৫।
প্রীতি-শ্রদ্ধা-আনুগত্য
প্রেষ্ঠতেই তা' নিরেট রাখিস,
তাঁ'র সাথে যা'র যে-সঙ্গতি
ভেদ বা মিলন বুঝে দেখিস,
তেমনতরই সেই তালেতে
শিষ্ট-চতুর উদ্দীপনায়,
ততটুকু খুলবি হৃদয়
সুষ্ঠু কৃতির ব্যঞ্জনায় । ১২৬।
যে-অবস্থায় যেমন থাক—
শ্রদ্ধারতি চর্য্যাসেবা,
স্বতঃস্রোতা হ'য়ে চললে
তা'র পরাক্রম রুখবে কেবা !
আনুগত্য-কৃতি-নিষ্ঠা
এমনই তা'কে ক'রে তোলে—
টলে নাকো,—সমান-স্রোতা
যদি হ'য়ে থাকে, চলে । ১২৭ ।
নিষ্ঠা-আনুগত্য-কৃতি
দীপ্তি জানিস্ জীবনের,
ঐ দীপ্তি নিভিয়ে দিলে
সর্ব্বনাশে পড়বি ঢের । ১২৮।
অটুটু নিটোল ঊর্জ্জী নেশায় 
আনুগত্য-কৃতিসহ
নিষ্ঠা পালিস যত্ন ক'রে
জীবনকে কর্ সুনির্ব্বাহ । ১২৯ ।
ইষ্টনিষ্ঠা-আনুগত্য-কৃতি
নেশা হ'য়ে যদি রইল না,
সবদিক দিয়ে বৃদ্ধিবিন্যাসে
জীবন তোমার বইল না । ১৩০।
প্রেয়নিষ্ঠায় তেষ্টাবিহীন
নাইকো তা'তে ঊর্জ্জনা—
পরাক্রমে নয়কো দীপ্ত,
রয় না প্রাণন-বর্দ্ধনা । ১৩১ ।
শ্রেয়নিষ্ঠা-আনুগত্য-কৃতি 
অটল-বিপুল যাহার যত,
জীবনে তাহার উন্নতিও
অটল-বিপুল তেমন তত । ১৩২।
আনুগত্য, শিষ্টকৃতি
সহ যাহার শ্রমপ্রীতি
ইষ্টনিষ্ঠায় থাকে অটুট,—
প্রায়ই হয় তা'র শুভ গতি । ১৩৩ ।
প্রেষ্ঠই যা'র স্বার্থ—
শ্রেষ্ঠই অর্থ যা'র,
উচ্ছলাতে ফোটে ভাগ্য
উদ্যমে অপার । ১৩৪ ।
পরাক্রমী হৃদয় রাখিস্
পোষণ ক'রে ঊর্জ্জনায়,
ইষ্টরাগের বীর্য্যতালে
সৎসমীচীন বর্দ্ধনায় । ১৩৫ ।
ইষ্ট কিংবা প্রেষ্ঠ-নিষ্ঠায়
সব জীবনটার বিন্যাস যেমন,
প্রতিটি কর্ম্মে মর্ম্মে-মৰ্ম্মে
ফ'লে থাকে ফল সেমনি তেমন । ১৩৬।
যা' আছে তোর সব গুছিয়ে
ইষ্টার্থেতে চর্য্যা কর,
সদ্-আচারে শুভ-দীপনায়
ধৃতিটাকে জাপটে ধর্ । ১৩৭ ।
জীবন-বিভব যা' আছে তোর
ইষ্টার্থে ক'রে নিবেদন,
বিপুল সেবায় মুখর হ'য়ে
চর্য্যারত রাখ্ জীবন,
নিষ্ঠানিপুণ ধৃতি তোমার
বিন্যাস ক'রে সব-কিছু,
উন্নতিতে নতি রেখে
চলবেই তোমার পিছু-পিছু । ১৩৮ ৷
ইষ্টনিষ্ঠা চল নিয়ে তুই
আনুগত্য-কৃতির রাগে,
অটুটভাবে অমন চলায়
জাগবে সবাই জাগার যাগে । ১৩৯।
শিষ্ট-সুধী ইষ্টনিষ্ঠা
আনুগত্য-কৃতিসম্বেগ,
স্বতঃস্রোতা সিদ্ধি সেথায়,
ব্যক্তিত্বে আনে বিভব-বেগ । ১৪০ ।
ব্যক্তিত্ব তোর দৃপ্ত হ'য়ে
ইষ্টনিষ্ঠার ঊর্জ্জী টানে,
শিষ্ট স্বভাব-সঙ্গতিতে
নেচে উঠুক প্রেষ্ঠ-তানে । ১৪১।
দীপ্ত তোমার ব্যক্তিত্বটা
দিক্ ছিটিয়ে সৎ-এর আলো,
সবাই তা'তে দেখে-শুনে
স্বস্থ থাকুক, থাকুক ভালো । ১৪২।
জীবনধারায় পাগল-পারা
ইষ্টনিষ্ঠায় অটুট হ'য়ে—
সেই চলনে চলে যা'রা
ইষ্টার্থ চলে জীবন বেয়ে । ১৪৩।
ধৰ্ম্মটাকে ছাড়িস্ নে-কো,
ইষ্টনেশায় বিভোর থাক্‌,
ধৃতি-আচরণে অবাধ হ'য়ে
জীবনে ফুটুক অমর রাগ । ১৪৪।
ইষ্টনিষ্ঠ আনুগত্য—
অটুট ক'রে কৃতিস্রোত,
সুসন্ধিৎসু বোধ-বিজ্ঞতায়
চল্ বাড়িয়ে জীবন-জ্যোত । ১৪৫।
কৃতিদীপ্ত অনুগতি
সঙ্গতিশীল অনুচলন,—
ইষ্টতালে সুষ্ঠু চলায়
ফুটেই থাকে তা'র বলন । ১৪৬।
নিষ্ঠাসহ শিষ্ট-চলন
বাড়বে যত সুষ্ঠু তালে,
বাড়বে বিভব তেমনতরই
উন্নতিও ঘটবে ভালে । ১৪৭।
সদ্‌গুরুই যা'র নিষ্ঠাকেন্দ্র,
আনুগত্য, কৃতিরাগ,—
ঐ নিয়েই সে জীবন চালায়
লাগে না তা'য় অন্য দাগ । ১৪৮।
ধৃতি-পালন, শাসন-পোষণ
দীপ্ত জীবন-ঊর্জ্জনায়,
প্রীতির আবেগ নিয়ে ভগবান্
চলেন অসৎ-বর্জ্জনায়,

শিষ্ট জীবন নিয়ে চলেন
জীবন-সত্তার নিয়ে বোধ,
মানুষরূপে সেই ভগবান্ –
অসৎ যা' সব ক'রে নিরোধ । ১৪৯।
জীবনচর্য্যার ঊর্জ্জনা তোর
প্রতি ব্যষ্টিতে ছড়িয়ে যা'ক্,
সমষ্টি সব সেই দীপনায়
অমর তেজে বৃদ্ধি পাক্ ;
হো'ক সকলে প্রত্যয়শীল
অনুশীলনে হো'ক্ বিভোর,
হাসিমুখে দেশটা জাগুক্
যাক্ কেটে সব অসৎ ঘোর ।
পারস্পরিক আদান-প্রদান
পালন-পোষণ-বৰ্দ্ধনা,
নেচে-নেচে উঠুক হেসে
করুক বিভুর বন্দনা । ১৫০।
কৃতি-যাগে চল্ রে সবাই
ধৃতির পথটি নে বেছে,
ধৃতিহারা যা’-সব কৃতি
জানিস্ ব্যর্থ, সব মিছে ;
ধৃতির সাথে বিভব আসুক
ঐশ্বৰ্য্য নাচুক তাথৈ থৈ,
ধৃতি-বিভব স্বভাবে ফুটুক
নইলে বাঁচার উপায় কৈ ? । ১৫১।
যেমন ক'রে যা বলা আছে
আগ্রহদীপ্ত বোধবিবেকে,
করতিস্ যদি সেগুলি সব
কী যে হ'ত বলবে তা' কে ?
দুনিয়াটা সুদীপ্তিতে
সঙ্গতিশীল তৎপরতায়,
উঠত ফুটে স্বৰ্গ হ'য়ে
কত পারিজাত ফুটত যে তা'য় !
গবেষণাই গৰ্ব্ব হ'য়ে
শ্রমসুখের আলিঙ্গনে—
ব্যষ্টিগুলি শিষ্ট হ'য়ে
বৃদ্ধি পেত উন্নয়নে ;
ব্যতিক্রমী যা' সেগুলিও
শিষ্টপথের মিষ্ট ধারায়,
সংযত সংহত হ'য়ে
ফুটত খানিক পারগতায় । ১৫২।
নিষ্ঠা-অনুগতি-কৃতি
দৃঢ় দীপ্ত ক'রে রাখ ;
শ্রমকাতর হো'স্ না কভু
চর্য্যারতি নিয়ে থাক্,
স্বাস্থ্য রাখিস্ শিষ্ট তালে
শুভ-দীপ্ত সন্দীপনায়,
শরীর-মনের সঙ্গতিটি
রাখিস্ নিত্য ঊর্জ্জনায়,
ইষ্টনিষ্ঠ লোকচৰ্য্যী
মহাব্রত নিয়ে চল,
দেখ না তা'তে থাকিস্ কেমন !
দেখ না কেমন বাড়ে বল !
অবহেলা করিস্ নাকো
নিষ্ঠা-আনুগত্য-কৃতি,
তাহ'লে কিন্তু মিইয়ে যাবে
বাড়বে না নিজ ও পরের ধৃতি । ১৫৩।
স্বার্থলোলুপ, ঔদ্ধত্য-দুষ্ট,
সাধু, সৎ আর কৃতীজন,
অধ্যাপক বা গুরুর কাছে
সবাই করে অনুশীলন,
ভজনচৰ্য্যায় অর্ঘ্য যা' পায়
স্বতঃস্বেচ্ছ সন্দীপনার,
তাই-ই খেয়ে-দেয়ে কিন্তু
শিষ্ট জীবন বাঁচে সবার ;
নিষ্ঠা-আনুগত্য-কৃতির
এমনতর ভজন-প্রদীপ,
উছল ক'রে তোলে সবায়
ইষ্টনিষ্ঠায় থেকে সন্দীপ ;
স্বস্তিচৰ্য্যায় শিষ্ট-কুশল
এমনি ক'রে সবাই হয়,
স্বার্থনিষ্ঠা শুধুই কেবল—
তা'রা কিন্তু ওতে নয় । ১৫৪ ।
নিষ্ঠা-আনুগত্য-কৃতি
ধৃতির আসন ঐ জানিস,
ওর সঙ্গে আপোসরফা
ব্যতিক্রমে টানেই বুঝিস্ ;
নিষ্ঠার সাথে ধৃতিসম্বেগে
শিষ্ট-নিটোল অটুট টান,
না র'লে কিন্তু ধৃতি তোমার
পাবেই জাহান্নমেই স্থান ;
সঙ্গতিশীল তৎপরতায়
নিষ্ঠা-আনুগত্য-কৃতি,
সার্থকতায় যতই চলে
ততই শিষ্ট হয়ই ধৃতি ;
নিষ্ঠানুগ-কৃতির সাথে
ব্যতিক্রমের আপোসরফা,
জাহান্নমের দিকেই চ'লে
হবেই তোমার জীবন দফা ;
ইষ্টে বসিয়ে নিষ্ঠাসনে
আনুগত্য-কৃতি নিয়ে,
সঙ্গতিশীল তৎপরতায়
যে চলে তাঁ'র বিভব নিয়ে,—
তাই-ই কিন্তু শিষ্ট বিভা
নিষ্ঠা-আনুগত্য-কৃতির,
ব্যতিক্রমে হবেই হবে
দুষ্ট তোমার বিভব ধৃতির । ১৫৫।
প্রাপ্তিপ্রত্যাশা ছেড়ে দিয়ে তুই
পরের চর্য্যায় থাক্ রত,
আপ্যায়নী উন্মাদনায়
প্রীতির বাঁধন রাখ্ নিয়ত,
ঊর্জ্জনাতে স্ফূর্ত্ত হ'য়ে
বেড়ে চল্ রে বেড়ে চল,
পারস্পরিক আদান-প্রদানে
চল্ ওরে চল্ হ'য়ে উছল,
অনুচৰ্য্যায় অনুকম্পায়
যা' পারিস্ তুই দিয়ে চল,
অন্যেও করুক সেই রকমই—
সঞ্চারণায় তা'কে বল,
শিষ্ট-সুষ্ঠু সঙ্গতিতে
প্রীতির তোড়ে সব বেঁধে,
সবার শক্তি উস্‌কে তুলিস্
সঙ্গতি সব শুভ'য় সেধে ;
সব বিরোধ তুই নিরোধ ক'রে
ধৃতিরাগে ওঠ্ জ্ব'লে,
সবের বুকটি সবল ক'রে
সঙ্গতিতে নে তুলে ;
তৃপ্তিভরা বুক নিয়ে তুই
দীপ্ততেজা হ'য়ে চল্
দেখলে কা'রো আপদ-বিপদ্
মুক্ত করিস্ ধ'রে বল ;
সঙ্গতি তোর এমন রাখিস্—
বজ্রতেজা গর্জ্জনে,
নিরোধ করিস্ সব আপদ তুই
সুসংহতির তর্জ্জনে,
চল হ'য়ে চল আরো হ'য়ে
আরোর পথে আরোতর,
এমনি ক'রে আরো হ'য়ে
পরিস্থিতি আগলে ধর ;
পরিচর্য্যায় ধৈর্য্য নিয়ে
জীবন-চলন রেখে ঠিক,
অমনতর ক'রে সবায় —
সংহত কর্ দিগবিদিক্ ;
ইষ্টনিষ্ঠা-আনুগত্য—
কৃতিদীপন ঊর্জ্জনা,
জীবন-ধৃতি নিয়ে চলুক
এনে সবার বর্দ্ধনা ;
ওঠ, ওঠ, ওঠ, ওঠ না, ওরে
সটান হ'য়ে দাঁড়িয়ে ওঠ্,
দিগন্তেরই দিগবিজয়ে
সবা'র মাঝে ফুটে ওঠ্ ;
ভক্তি-শ্রদ্ধা অটুট রেখে
নিষ্ঠানিপুণ অনুরাগ,
নিত্যদিনই করাস্ করিস্
নিজ-সহ সবা'র জীবন-যাগ ;
তোমার যাগটি জাগিয়ে তুলুক
অঢেল ক'রে সবা'কে,—
শ্ৰমচর্য্যী উদ্দীপনা
জাগুক বিপুল ঝলকে । ১৫৬।

Loading