সত্যানুসরণ-এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:
সন্দেহের নিরাকরণ কর, বিশ্বাসের সিংহাসনে ভক্তিকে বসাও, হৃদয়ে ধৰ্ম্মরাজ্য সংস্থাপিত হোক।
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—ঠিক আছে? (শ্রীকণ্ঠদার দিকে তাকিয়ে) সন্দেহের নিরাকরণ কিভাবে হবে?
শ্রীকন্ঠদাকে নীরব দেখে তিনি বললেন—ঠাকুর বলেছেন, “শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস দুই ভাই”। তারপর ঠাকুর বললেন, “বিশ্বাসের সিংহাসনে ভক্তিকে বসাও”। শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের মধ্যে তফাৎ কোথায়? শ্রদ্ধা থাকলে কী হয়?
শ্রীকন্ঠদার কথা পরিষ্কার না হওয়াতে শ্রীশ্রীপিতৃদেব এবার তনুদাকে (নিখিল ঘটক) ঐ একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলেন।
তনুদা—বিশ্বাস না এলে ভক্তি আসতে পারে না। বিশ্বাস এলে ভক্তি আসে।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—সে তো বুঝলাম। কিন্তু শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস কি ক’রে আসে?
তনুদার আলোচনায় প্রশ্নের উত্তর স্পষ্ট না হওয়ায় তিনি জিজ্ঞাসা করলেন—শ্রদ্ধা মানে কী?
উপস্থিত সবাই চুপচাপ। শ্রীশ্রীপিতৃদেব বললেন—শ্রধ্-ধাতু থেকে শ্রদ্ধা এসেছে, শ্রদ্ধা থেকেই বিশ্বাস ও ভক্তি হয়।
অভিধান খুলে দেখা হ’ল ঠিক তাই। শ্রদ্ধা মানে হচ্ছে ভক্তি, বিশ্বাস।
এবার বাণীটির ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে শ্রীশ্রীপিতৃদেব বললেন—ধর, কোন মহাপুরুষ-সম্বন্ধে কিছু শুনলাম। কাছে গেলাম। দর্শন করলাম। উপদেশ-আলোচনা শুনলাম। শ্রদ্ধা হ’ল। তাঁর উপদেশমত চলতে-চলতে সুফল পেলাম, তাই বিশ্বাস এল। Sincerely (নিষ্ঠাসহকারে) ক’রলে বিশ্বাস গভীর হয়। তারপর ভক্তি আসে। শ্রদ্ধা হ’ল, তাই তাঁর (ঐ মহাপুরুষের) অনুশাসনগুলি পালন করতে লাগলাম। শ্রদ্ধা ক’রলাম, বিশ্বাস এল, ফলে ভক্তি হ’ল। তাই ঠাকুর বলেছেন, শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস দুই ভাই’। শ্রদ্ধা হলেই বিশ্বাস আসে।
শ্রীকন্ঠদা—“বিশ্বাসের সিংহাসনে ভক্তিকে বসাও’—এর মানে কী?
শ্রীশ্রীপিতৃদেব পরমেশ্বরদা (পাল)-কে এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার নির্দেশ করলেন। পরমেশরদা কিছু বললেন, কিন্তু সকলের নিকট তা’ সম্পূর্ণ পরিষ্কার হ’ল না। বসাওন সিংদা প্রশ্ন তুললেন—ঠাকুর বলেছেন, বিশ্বাসের সিংহাসনে ভক্তিকে বসাও’।
তাহলে ভক্তি ছাড়া অন্য কিছুও বসানো যায়?
উপস্থিত কয়েকজন এ প্রশ্নের উত্তরে কিছু-কিছু বললেন। শ্রীশ্রীপিতৃদেব সবশেষে বললেন—হৃদয়ে ধর্মরাজ্য স্থাপন করতে হ’লে ভক্তিকেই বসাতে হবে।
[ইষ্ট-প্রসঙ্গে/তাং-২৭/১০/৭৩ ইং]
[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা ২১৫-২১৬]