সরল সাধুতার মত আর চতুরতা… – ব্যাখ্যা

সত্যানুসরণ-এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:

সরল সাধুতার মত আর চতুরতা নেই ; —যে যেমনই হোক না কেন, এ ফাঁদে ধরা প’ড়বেই প’ড়বে। Honesty is the best policy. (সরল সাধুতাই চরম কৌশল)।

পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :

সতীশদা—সাধু মানে তো ত্যাগী প্রেমী; এর ভেতর আবার সরল কথা কেন?

শ্ৰীশ্ৰীবড়দা—কথাটা হচ্ছে সরল আর অসরল নিয়ে। অসরল মানে বক্র। সরল বিশ্বাসে ইষ্টের প্রতি অনুরাগে মানুষের যে চারিত্রিক বিকাশ হয়, তা’ অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার ক’রে, মানুষের চরিত্র গঠন করে। গোটা পরিবেশ তার চারিত্রিক বিচ্ছুরণে আর ভালবাসায় charged হয়। মানুষ মাত্রেই তার ভালবাসা ও প্রেমে আকৃষ্ট হয়।

সতীশদা—সাধু মানে?

বঙ্কিমদা—নিষ্পন্নকারী।

সতীশদা—কি কাজ নিষ্পন্ন করতে হবে?

বঙ্কিমদা—ইষ্টকাজ। সরল সাধুর মনে হিসেব-নিকাশ নেই। তিনি বলেছেন, আমি করবো। অন্য কোনও Consideration থাকে না।

শ্রীশ্রীবড়দা—একজনের এক কাজ করতে-করতে অনেক দিন লেগে গেল। অন্য একজন সাথে-সাথে jump করে সেই কাজ ফয়সালা করলো । Passion Compromising ভালোবাসা থাকলে কখনও ঠাকুরের কাজ করে, আবার কখনও প্রকৃতির পাল্লায় পড়ে Compromise করে। এই Compromise করা মানেই ইষ্টকে sacrifice করা। ওর থেকে passionate love অনেক ভাল। আপাতঃ দৃষ্টিতে passionate বললেও ওর ভেতর মূলধন আছে। ওই love ইষ্টের দিকে গেলেই গতি হয়। তখন ওটা হয় passion pervading love। বিল্বমঙ্গল, তুলসীদাসের passionate love ছিলো। কিন্তু ওরা আসল lover। Wholeheartedly ভালোবাসে। তাই মন যখনই ইষ্টমুখী হ’ল, চিন্তামণিতে বিল্বমঙ্গলের মন আটকে থাকলো না। জীবন ইষ্টময় হয়ে উঠলো।

[‘যামিনীকান্ত রায়চৌধুরীর দিনলিপি/তাং-৩১/১০/৭৪ ইং]

[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা ২৪০ – ২৪১]