সত্যানুসরণ-এ থাকা শ্রীশ্রীঠাকুরের বাণীটি হলো:
সুখ কিংবা দুঃখ যদি তোমার গতিরোধ না করে, তবে তুমি নিশ্চয় গন্তব্যে পৌঁছিবে, সন্দেহ নাই।
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীবড়দা কর্তৃক ব্যাখ্যা :
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—দীপদ্যোতক আলোচনা কর। সুখ মানে কী? দুঃখ মানে কী?
দীপদ্যোতক—সুখ মানে আনন্দ, দুঃখ মানে কষ্ট।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—গতিরোধ কাকে বলে? গতি মানে কী?
দীপদ্যোতককে নিরুত্তর দেখে বললেন—ঠাকুরবাড়ি আসছ, অন্য কেউ যদি গতি থামিয়ে দেয় সেটা হ’ল গতিরোধ। আর যদি নিজে থেমে যাও, তা হ’ল থামা। ঠাকুরবাড়ি আসছ, খুব রোদ, মনে হল শুয়ে থাকিগে। শুয়ে থাকলাম। এখানে রোদ তোমার গতিরোধ করল। ঘরের মধ্যে ঠাণ্ডা আরামে বিছানায় শুয়ে পড়লে। গন্তব্য কী? যেখানে পৌঁছাতে হবে তাকে বলে গন্তব্য। স্থল মানে জায়গা। আবার এমনও হতে পারে স্কুল যাচ্ছ, হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে। আঘাত লাগল। স্কুল যাওয়া হ’ল না। হোঁচট খাওয়া তোমার স্কুল যাওয়া রোধ করে দিল।
এমনও হতে পারে—স্কুল যাচ্ছ, পথে বন্ধুর সাথে দেখা। অনেকদিন পর দেখা। গল্প শুরু হ’ল। গল্প করতে-করতে মিষ্টির দোকানে ঢুকলে। দুজনে মিষ্টি খাওয়া, গল্প করা এসব করতে গিয়ে আর স্কুল যাওয়া হ’ল না। স্কুল না গিয়ে বন্ধুর সাথে গল্প করা কি ঠিক?
দীপদ্যোতক—আজ্ঞে না।
শ্রীশ্রীপিতৃদেব—কী বলা দরকার ছিল? বলতে হত তোমার সাথে অনেক গল্প আছে, এখন স্কুল যাচ্ছি। স্কুল থেকে এসে গল্প করব।
সুখ কেমন করে গতিরোধ করে? স্কুল যেতে-যেতে বন্ধুর সাথে দেখা। আনন্দ হ’ল। সেই আনন্দে স্কুল যাওয়া বন্ধ করে বন্ধুর সাথে গল্প শুরু করে দিলে। এখানে আনন্দ তোমার গতিরোধ করল।
[ইষ্ট-প্রসঙ্গে/তাং-৯/৫/৭৬ ইং]
[প্রসঙ্গঃ সত্যানুসরণ পৃষ্ঠা ১৮০]