সাধনা প্রসঙ্গে অনুশ্রুতি ৪র্থ খন্ড (১-৪০)

অনুশ্রুতি ৪র্থ খন্ডে “সাধনা” শিরোনামে পৃষ্ঠা ২৭ – ৪১ পর্যন্ত ৭৭ টি বাণী রয়েছে।
নিচে ১-৪০ বাণীসমূহ দেয়া হলো।

সাধনা মানে সেধে নেওয়া
স্মরণ-মনন-করণেতে,
অভ্যাসেতে স্বতঃ হ'লে
সিদ্ধ হ'য়ে ওঠে তা'তে । ১ ।
ভাবতে-ভাবতে আসে ধ্যান,
করতে-করতে আসে জ্ঞান । ২ ।
পুরুষোত্তমের মহান্ গৌরবে
ধৃতি-কৃতি-সহ দাঁড়াও সৌরভে । ৩ ।
শিষ্ট হ'য়ে চল তাঁ'র সুষমায়—
ধ'রে পুরুষোত্তম ধৃতি-চেতনায় । ৪ ।
আদর্শ-বিভোর শিষ্য না হ'লে
ঊর্জ্জী কৃতি চলে পিছলে । ৫।
আসে না সম্বৃদ্ধি, নিষ্ঠা, কৃতি
আদর্শে যদি না রয় ধৃতি । ৬।
ধারণ-পালন সম্বেগহীন
আদর্শ ধ'রলে—হয় সে দীন । ৭।
আদর্শ-নিয়ন্ত্রণ না মানলে পরে—
বোঝ না কি তা'কে শয়তানে ধরে ? ৮।
আদর্শনিষ্ঠায় থাকলে চুক্‌
ভেঙ্গেই পড়ে সাত্বত তুক্‌ । ৯ ।
'সদাচারসিদ্ধ আদর্শ যা'র,
অনুসরণে জয় আসেই তাঁ'র । ১০।
শিষ্য না মানলে আদর্শ-নিদেশ,
যায় উৎসন্নে নিজে ও স্বদেশ । ১১।
নিষ্ঠাবিহীন রাগ-ঊর্জ্জনা
থাকেই নিথর, আনে না বৰ্দ্ধনা । ১২।
কৃতিচৰ্য্যায় লোকপালনে
বিমুখ শিষ্য যায় পতনে । ১৩।
ধ্যান করা মানেই ধ্যেয়'র চিন্তা
ভাবে তা'কে ফুটিয়ে নিয়ে,
তাঁরই সকল চিন্তাধারায়
জীবনটাকে বিনিয়ে দিয়ে । ১৪ ।
ভালমন্দের জল্পনা তোর
বাস্তবতার মোতাবেকে,
কল্পনাতে সাজিয়ে নিয়ে
গ'ড়ে তোল তুই তপ-আবেগে । ১৫ ।
ধ'রবি নাকো, ক'রবি নাকো,
চ'লবি না তুই তাঁর পথে
প্রতিষ্ঠা তাঁ'র আনবি নাকো
নিষ্ঠানুগ কৃতির সাথে ;
প্রেষ্ঠের গায়ে লাগলে টোকা
গর্জ্জে ওঠে না হৃদয় তোর,
নিষ্ঠা-কৃতির এই ফাঁকিতে
তবুও ভাবছিস্ কিস্তি ভোর ? ১৬।
কোথায় কিসে কী সমীচীন !
কী-ই বা কা'কে করছে হীন !—
বুঝে-সুঝে বিনিয়ে নে তুই
বোধ-বিকাশে র'স্ নে দীন । ১৭ ।
গর্ব্ব যদি দূরই কর
কর সেটা এখনই,
শুভ ব'লে বুঝলে যেটা
কর সেটা তখনই,
সেই মুহূর্ত্তে না করলে তা'
আয়ত্তে আনতে পারবে না,
ভাঙ্গাচোরা হ'য়ে চ'লবে
হবে নাকো নিষ্পাদনা । ১৮।
কথায়-কথায় অতিষ্ঠ হওয়া—
এ দোষটা যাবে কিসে ?—
প্রস্তুতি নিয়ে সাবধানতায়
তিষ্ঠাতে শেখো রেখে দিশে । ১৯।
ধাপ্পাবাজি ফাঁকির তোড়ে
স্বার্থলোলুপ গর্জ্জনে
ইষ্টনিষ্ঠা ছাড়িস নাকো —
ব্যতিক্রমী তর্জ্জনে । ২০ ।
নিষ্ঠানিটোল অনুকম্পায়
আনুগত্য-কৃতি নিয়ে,
ইষ্টার্থে তুই অটুট থেকে
আত্মবিচারে চল্ না ধেয়ে । ২১।
আত্মবিচার ক'রতে হ'লেই
সব বিনিয়েই বুঝতে হয়,
বুঝে-সুঝে বাস্তবতায়
তবেই তো তা' সিদ্ধি পায় ! ২২ ।
নিজের বিচার নিজেই ক'রে
নিজেকে শাসন নিজেই কর্,
আত্মশাসন-অনূনয়নে
স্বস্তিচৰ্য্যা অটুট ধর্ । ২৩।
নিজেকে বিচার করতে জানে না
অন্যের বিচার করবে কে ?
বিচারের নামে অবিচারই
বাড়বে ক্রমে তাকে-তুকে । ২৪।
অসৎ-নিরোধী আত্মশাসন
বহ্নিদীপক অনুরাগে,
দণ্ডনীয় করলে কিছু
করবি নিজে সেইটি আগে ;
নিজেকে শাসন ক'রতে শিখলে
অন্যেও শিখবে আত্মশাসন,
উদ্দীপনায় উদ্দাম হ'য়ে
সৎ-সন্দীপী হবে জীবন । ২৫।
ইষ্টনিদেশ-ব্যতিক্রমী
কোন কথাই শুনবি না,
সমর্থনও করবি না তা'
আচার-ব্যাভারেও করবি না । ২৬।
কিছু করার নিদেশ পেলেই
ঝাঁপিয়ে পড়িস্ তুই তখনই,
হৃদয় দিয়ে সাধবি সে-কাজ
ঊর্জ্জনাও তুই পাবি তেমনই । ২৭ ।
ইষ্টনিদেশ-পালন আনে
উজ্জয়িনীর ধৃতি ও জ্ঞান,
আনেই সেমনি প্রাজ্ঞ চলন,
কৃতির দ্যুতি করেই দান । ২৮।
ইষ্টনিদেশ হোক্‌ না কঠিন
হোক্‌ না যতই ক্লেশপ্রদ
নিৰ্ব্বাহতে হয়ই সেটা
জ্ঞানদীপ্ত শুভপ্রদ ;
তাচ্ছিল্য যা'রা ক'রে থাকে
ঐ নিদেশের অনুগতি,
জ্ঞানেও অন্ধ তেমনি থাকে
হয়ও সেমনি কৃতি-গতি । ২৯ ।
সৎ-আচার্য্য বা অধ্যাপকের
নিদেশ-পালন করে না যা'রা,
ব্যর্থ, মর্দ্দিত, কৃতঘ্ন হ'য়ে
জীবনটাকে করে সারা । ৩০।
ইষ্টনিদেশের সুসঙ্গতি
নিষ্ঠানুগত্য-কৃতি নিয়ে,
খরস্রোতা হ'য়ে চলিস্
মন ও প্রাণের আবেগ দিয়ে । ৩১।
নিদেশটাকে আগ্রহশীল
কৃতিতে করলে নির্ব্বহণ
অনুশীলন তো তা'কেই বলে—
আসে যা'তে নিষ্পাদন । ৩২।
ইষ্টনিদেশ অনুক্রমে
কৃতিতে ক'রলে নিষ্পাদন,
সমাধান তো তাই-ই হ'ল
নিদেশ হ'ল নিৰ্ব্বহণ । ৩৩ ।
ইষ্টনিদেশ যেমন যা' হয়
নিষ্পাদনে আনবি তা'
পারগতা বাড়বে ক্রমেই
রেখে কৃতি-সততা । ৩৪ ৷
টলবি নাকো নড়বি নাকো
ইষ্টনিদেশ ব্যতিক্রমি',
জীবনটাকে রাখ তাজা তুই
ধ'রে ইষ্ট-কৃষ্টিভূমি । ৩৫।
উন্নতিটার অর্থই জানিস্ 
উচ্চে নেশা নিরন্তর,
শ্রেয়নিদেশ নিখুঁত পালায়
বর্দ্ধনা হয় সহচর । ৩৬ ।
সার্থকতার কৃতি-চলন
নিয়ে সফল সঙ্গতি
যোগদীপনী দ্যুতি আনে—
মহান্ বিভব-উন্নতি । ৩৭ ।
দক্ষ-নিপুণ ত্বারিত্যতে
ইষ্টনিষ্ঠ স্বভাব বসে,
স্বতঃশিষ্ট অনুচলন
থাকেই কিন্তু সত্তারসে । ৩৮।
নজর রাখিস্ ঠিক ক'রে তুই
ইষ্টনিষ্ঠ হ'য়ে চলায়,
তাড়িয়ে দিয়ে সব যা'-কিছু
হ'লে তাহার অন্তরায় । ৩৯।
দাঁড়াটি তোর ঠিক যদি রয়
         নিষ্ঠা-অটুট কৃতি নিয়ে,
সাধ্য কি তোয় একটু নড়ায়
         আঘাত-ব্যাঘাত শতেক দিয়ে  ? ৪০ ।

Loading