সেবা নিয়ে অনুশ্রুতি ১ম

অনুশ্রুতির ১ম খন্ডে “সেবা” শিরোনামে পৃষ্ঠা ২৬৩ – ২৬৮ পর্যন্ত মোট ৩২ টি বাণী রয়েছে। নিচে বাণীসমূহ দেয়া হলো।

দেয় না, পেতে করে চোপা
তা'র পাওয়াতে পাষাণ-চাপা। ১।
সম্বেদনায় সহজ দান
আনেই পাওয়ায় পরিত্রাণ। ২।
সেবায় দিয়ে সম্বর্দ্ধন
আয় যা' পাস্, উপার্জ্জন। ৩।
পরিস্থিতির বাঁচা-বাড়ায়
সবার জীবন ওতেই দাঁড়ায়। ৪।
ধুকলি পেতে— দিলি না
খোয়ালি পাওয়া, বুঝলি না। ৫।
পরের সেবায় দিন কাটালি
ঘরটি ফেলে উপেক্ষায়,
সেবাপ্রাণ মোটেই ন'স্ তুই
ফিরিস্ কামের সমীক্ষায়। ৬।
আরোগ্যেতে মন নাই তোর
হ'লি চিকিৎসক,
জীবনের উপর চাল দিয়ে রে
সাজলি কঠিন ঠক;
চিকিৎসাতে চাস্ যদি তুই
আত্মপ্রসাদ টাকা,
টাকায় নজর না দিয়ে তুই
রোগীর পানে তাকা। ৭।
জীবন-বওয়ায় অভাব-কাতর
যেই কেন না আসে,
সাধ্যমত পূরে দাঁড়াস্
সমবেদনায় পাশে;
এ-সব ক'রে ঠকলেও তুই
দেখবি কালে-কালে,
বিফলতা হ'টে গিয়ে
নাচছে সুফল তালে। ৮।
পাড়াপড়শীর খোঁজ রাখিস্ তুই
কখন তা'রা কেমন থাকে,
ইষ্টানুগ সেবায় আনিস্
উচ্ছলতায় দুর্ব্বিপাকে। ৯।
ইহলোকে করবি যা' তুই
উন্নতি বা অবনতি,
এর ফলই তো করবে রে স্থির
পরলোকে তোর গতি। ১০।
সঞ্চয় যদি করিস্ই তুই
সেবার তরেই করিস্ তা',
সঞ্চয় যদি সেবায় পুজে
তবেই তাহার সার্থকতা। ১১।
মরণ-রঙে রঙীন হওয়া
নয়তো বীরের কাজ,
ঋদ্ধিপালী গণসেবা
সেই তো বীরের সাজ। ১২।
সেবাকর্ম্মে যা'রাই কৃপণ
দরিদ্রতায় তা'দের পায়,
সবার কাছে তা'দের দাবী
তা'দের পালাই যেন দায়। ১৩।
সেবার আবেগ বাস্তবতায়
নাই থাকে তোর যদি,
লাখ দেওয়াতেও পাবি না তুই
জানিস্ নিরবধি। ১৪।
রোগের জ্বালা-যন্ত্রণাতে 
নিরাশ্রয়ী ধুঁকছে যে,
সুস্থিকামী শুশ্রুষিণী
ভিক্ষা চাহে, আয় রে দে । ১৫।
লাখ খাটুনি খাটিস্ যদি
সেবার পথটি ধ'রে,
প্রীতিহারা তেমন সেবায়
র'বি না আদরে। ১৬।
মনের সেবা আগে করিস্ 
বাহ্য সেবা তা'র সাথে
এমনতর করায় জানিস
শুভ আশিস্ পায় মাথে। ১৭।
প্রীতির নন্দনাতে সেবা
যেমন জানিস্ চলল,
প্রবর্দ্ধমান হৃদয়াবেগ
অমনি তা'রে ধরল। ১৮।
ধুঁকছে রে ঐ ক্ষুধায় কাতর
আতুর-চোখে অবশ পায়ে,
যা' পারিস্ তুই এই বেলা দে
বুভুক্ষুদের পেটের দায়ে। ১৯।
আদর্শপ্রাণ ছিন্ন ক'রে
সম্ভ্রমেরে করি' হীন,
জনসেবা যতই করিস্
হ'বিই হ'বি তুই মলিন। ২০।
নেওয়া ছাপিয়ে দান ও দয়া
না দাঁড়ালে তোর,
জোঁকের মতন শোষক রে তুই
অলস ভণ্ড চোর। ২১।
গুরুচর্য্যা-সেবা-ধাপ্পায়
ঠক-চাতুর্য্যে উদর ভরে,
ঠগ্-বিকারী মস্তিষ্ক তা'র
ঠকিয়ে তা'রে বংশে ধরে। ২২।
বিনয়-গম্ভীর সেবা-ব্যবহারে
আদর্শপথে চ'লে,
লোকপ্রিয়তার শ্রদ্ধা পেলে
শ্রেয়ই ওঠে ফ'লে। ২৩।
পরিস্থিতির স্বার্থ হ'লে
তোমার বাঁচার বন্দনা,
সফল বাঁচা তবেই তোমার
এমন বাঁচে কয়জনা ? ২৪।
কাউকে ঘৃণা করিস্ যদি
        চল্ এখনই চল্,
সেবায় সুষ্ঠু ক'রে তা'কে
        ভাগ্য কর্ সফল। ২৫।
দাঁড়িয়ে আছিস্ যা'র মাঝে—
দেখ্ চেয়ে তা'র চারিধারে
কী লাগে কা'র কোন কাজে,
দেখবি গজায় উদ্ভাবনী
কোন্ ফিকিরে কী সাজে । ২৬।
ছোট্ট যা'রা নীচু যা'রা
তোমার আলিঙ্গনে
ফুল্লপ্রাণে মাতাল হ'য়ে
প্রেষ্ঠ-উদ্দীপনে,
স্বার্থ ব'লে আঁকড়ে ধ'রে
করলে তোমায় বন্দনা,
শ্রেষ্ঠ তুমি, সম্রাট তুমি
নরলোকের সান্ত্বনা। ২৭।
মনকে সৎ-এ উথলে তুলে
অভাব পূরণ করলে,
সেই সেবা হয় সত্যি সেবা—-
কথাটা কি ধরলে ? ২৮।
শুনলি কেবল ব্যথার কথা
মুখে দিলি সান্ত্বনা,
সেবায় সুস্থ সুখী ক'রে
উদ্বোধনা চলল না,
বন্ধ্যা সেবার চর্চ্চা ক'রে
কাট্ল রে তোর নিত্যদিন,
পূরণ-গড়ন না ক'রে তোর
সেবা হ'ল স্বতঃই ক্ষীণ । ২৯।
কথার সেবায় অভীষ্ট তোর
পূরবে নাকো ঠিক জানিস,
বাঞ্ছাপূরক দায়িত্ব চাপ
শক্তি বাড়ায় ঠিক মানিস্। ৩০।
সেবা-অছিলায় পূরতে উদর
গুরুর কাছে চাকরী করে,
নেওয়াটাকে উছল ক'রে
দেয় না লাভে উপচে ভ'রে;
শকুন সাহস এ অভ্যাসীর
ভাগাড় পানেই নিম্নশির,
ওজঃ-সম্বেগ সঙ্কোচনে
নিছক ক্ষয়ে মরেই মরে। ৩১।
আপদ-বিপদ দেখলে কা'রও
না ডাকতেই যাস সেথায়,
যত পারিস্ তেমনি করিস্
যা'তে বিপদ কেটেই যায়;
নিজের স্বার্থ বড় ক'রে
অপরের হীন ভাববি না,
আবেদনী সুরটি ছেড়ে
চাপান কথা বলবি না;
যেটুকু পারিস্ অভাবীকে
দিতে নারাজ থাকিস্ নাকো,
কেউ তোমারে দিলে কিছু
তা'কেও দিতে নজর রাখো;
ইষ্টস্বার্থ-অপলাপে
পরাক্রম চেতিয়ে তুলিস্,
আপোষরফায় যাসনে সেথায়
ইষ্টনীতি জোরেই ধরিস্;
এমনতর চলনা যদি
রাখতে পারিস্ নিত্যদিন,
দুনিয়ায় মাথা উঁচুই র'বে
হ'তে হবে না কভুই হীন। ৩২।

Loading